তুষারের ভাষ্য অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট নারী এনসিপির কোনো পর্যায়ের নেতা বা সদস্য নন।
“তিনি এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নন, কোনো সেলের অংশ নন, এমনকি সদস্য পদও পাননি,”—এ কথা জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন তুষার। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘ক’-এর সঙ্গে তার কোনো সাংগঠনিক ক্ষমতার সম্পর্কও নেই, যা ঘটনাটিকে ক্ষমতা সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে বিবেচনার প্রচেষ্টাকে ভিত্তিহীন করে তোলে।
স্ট্যাটাসে তুষার সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, “আমার সঙ্গে এক ব্যক্তির ব্যক্তিগত ফোনালাপ কে রেকর্ড করল? কীভাবে তা বিদেশে থাকা অ্যাক্টিভিস্টদের মাধ্যমে কাটছাঁট করে ভাইরাল হলো?” তার দাবি, অডিওটির ‘প্রতিটি পর্ব পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হয়েছে’ এবং সংশ্লিষ্ট নারী প্রথম থেকেই কল রেকর্ডের উদ্দেশ্যে কথা বলছিলেন।
স্ট্যাটাসে আরও উল্লেখ করা হয়, “ওই অডিও কলের আগে ৩২ মিনিটের একটি ভিডিও কল হয়েছিল, এরপর কিছু চ্যাটিং, তারপর আসে অডিও কলটি। এই ধারাবাহিকতা না বুঝলে পুরো প্রসঙ্গ বিকৃত হয়।”
তুষার অভিযোগ করেন, কল ফাঁসের পেছনে ব্যক্তি ‘ক’-এর ভূমিকাই সবচেয়ে বড়। প্রথমে তিনি নিজেই কল রেকর্ড করে, অন্য একটি ডিভাইস দিয়ে তার ভিডিও ধারণ করে তা পাচার করেছেন। অথচ কল ফাঁসের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ‘ক’ তা অস্বীকার করেন এবং বলেছিলেন, তিনি কিছুই জানেন না। তুষারের ভাষায়, “আমি সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করেছি। কতটা বোকা ছিলাম!”
তিনি জানান, এনসিপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে আসা-যাওয়ার সময়ও ‘ক’ তার পথ আগলে দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বারবার চাপ দিয়েছেন। পরে তাকে সেলের সদস্য না করা এবং দলে জায়গা না পাওয়ার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তাকে অভিযুক্ত করার অপচেষ্টা শুরু হয়।
স্ট্যাটাসে তুষার ইঙ্গিত দেন, এই ঘটনার মূল লক্ষ্য শুধু তিনিই নন, বরং পুরো এনসিপিকে ঘায়েল করা। এনসিপির নিবন্ধন প্রক্রিয়া, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এ দলের দৃঢ় অবস্থান এবং তার মুখপাত্র হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা—সবকিছু মিলিয়েই তাকে ‘টার্গেট’ করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ঘটনার সময়কাল, ব্যক্তিগত সম্পর্কের ধরন এবং কলের পূর্বাপর প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে তুষার বলেন, “নারী-পুরুষ সম্পর্কের প্রশ্নে শুধু কনসেন্ট বা বলপ্রয়োগ নয়, ফুসলানোর ক্ষমতাও একধরনের ক্ষমতা। এসব উপেক্ষা করে একতরফা দোষারোপ করা অনৈতিক।”
এনসিপির অন্য নেতাদের নাম টেনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ও কুৎসা ছড়ানোর সমালোচনা করে তুষার অভিযোগ করেন, “আমার ও তাজনূভা জাবীনের ছবি এডিট করে পর্নোগ্রাফির মতো বিকৃত কনটেন্ট বানিয়ে ছড়ানো হচ্ছে। এটা কেবল আমাকে নয়, আমার দলেরও মর্যাদাহানি।”
তিনি দলীয়ভাবে লিখিত ব্যাখ্যা জমা দেবেন বলে জানান এবং ফেসবুক ট্রায়াল বা গণআদালত-এর সংস্কৃতি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন।
শেষদিকে তিনি লেখেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে নাম উল্লেখ না করেও কথা বলছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো নারীকে উদ্দেশ করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা ঠিক নয়। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যেভাবে ডাবল গেম খেলা হয়েছে, তার জবাব ইতিহাস দেবে।”
তুষারের এই অবস্থান প্রকাশের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে এনসিপির অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক, নেতৃত্বের স্বচ্ছতা এবং নতুন দল হিসেবে তাদের ভবিষ্যৎ অবস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে তাজনূভা জাবীনের নাম ঘিরে ছড়ানো অনলাইন প্রচারণা এবং দলীয় ইমেজ নিয়ে এনসিপির ভেতরে যথেষ্ট চাপ তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।