নিজস্ব প্রতিবেদক
পাকিস্তান সেনাবাহিনী-এর তিন ব্রিগেডিয়ার ঢাকায় পৌঁছেছেন। তারা যাবেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী-এর কক্সবাজারের রামুতে অবস্থিত ১০ম পদাতিক ডিভিশনের সদর দপ্তরে।
সিনিয়র বাংলাদেশি সামরিক কর্মকর্তারা রামু সেনানিবাসে এ সফর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, কারণ এটি বর্তমানে আরাকান আর্মিকে সহায়তার ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত।
শনিবার বিকেল ৫টা ২৭ মিনিটে এমিরেটস-এর একটি ফ্লাইট (নং ৫৮৬) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানে থাকা তিনজন পরিপাটি পোশাক পরিহিত ব্যক্তি অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে একটি বাসে উঠে বিমানবন্দর ভবনের ইমিগ্রেশন ও নিরাপত্তা চৌকির দিকে এগিয়ে যান।
তাদের পাসপোর্ট, যা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের সদস্যদের নামে বলে জানা গেছে, যথাযথভাবে ইমিগ্রেশনে সিল মেরে দেওয়া হয়। এরপর ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানি কূটনীতিক এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান এবং স্টাফ কারে করে দ্রুত বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
এই তিন পাকিস্তানি কর্মকর্তা হলেন— ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাদিম আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ তালহা এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঊদ আহমেদ রাও। তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আমন্ত্রণে ঢাকা সফরে এসেছেন। ঢাকায় নেমেই প্রথমে তারা ঢাকার র্যাডিসন ব্লু হোটেলে ওঠেন।
বাংলাদেশ ইনসাইটসের হাতে আসা ভ্রমণ নথি ও অন্যান্য কাগজপত্রে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে ব্রিগেডিয়ার নাদিম আহমেদের পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়েছে ৩০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে, ব্রিগেডিয়ার তালহারটি ২৬ মে এবং ব্রিগেডিয়ার সাঊদেরটি ২৯ মে তারিখে।
তিনটি পাসপোর্টই নতুন মেশিন-রিডেবল এবং কোন প্রকার আগের ভিসা সিল বা মার্কিং নেই। প্রতিটি পাসপোর্টের মেয়াদ এক বছরের, যা বিশেষ উদ্দেশ্যে ইস্যু করা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো—এই তিন কর্মকর্তা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে ১০ম পদাতিক ডিভিশনের সদর দপ্তর সফর করবেন।
এক বাংলাদেশি সাবেক মেজর জেনারেল বলেন, তারা নিঃসন্দেহে গুপ্ত মিশনে রয়েছে, না হলে হঠাৎ রামু সেনানিবাস সফর কেন?
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে রামু সেনানিবাসকে একটি অতিসংবেদনশীল সামরিক কেন্দ্র হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে। এটি এখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরাকান আর্মিকে সম্ভাব্য রসদ ও সহায়তা দেওয়ার মূল কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত।
সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে ৫ জুলাই দুবাই হয়ে পাকিস্তান ফেরার আগে, এই পাকিস্তানি কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, যাদের মধ্যে মেডিকেল সার্ভিসেস অধিদপ্তর, অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেলের কার্যালয় এবং অন্যান্য ইউনিটের কর্মকর্তারাও থাকবেন।