এম কে, শাওন
একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র আজ একদল সুযোগসন্ধানী চোরের দখলে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২৪ সাল একটি ষড়যন্ত্রমূলক রাজনৈতিক বিপর্যয়ের কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে, যেখানে একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করতে পরিকল্পিতভাবে ছাত্র আন্দোলনকে ব্যবহার করা হয়।
সূত্রমতে, মূলত কোটা সংস্কার আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহার করে একটি বিভ্রান্তিকর এবং সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক নাটক সাজানো হয়। প্রথমে দাবী ছিল ৯ দফা, পরে তা রূপ নেয় ১১ দফায়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই আন্দোলনকে মোড় দেওয়া হয় মাত্র ‘১ দফা’—একটি সরকার পতনের দাবিতে। অথচ এই আন্দোলনের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে ছিল গভীর ধোঁয়াশা।
গণআন্দোলন নাকি, অতিউৎসাহী জনতার উন্মত্ততা
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী বা সচেতন নাগরিকরা এ ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল না। বেশিরভাগ সময় রাজপথে দেখা গেছে অতিউৎসাহী কিছু দলীয়-উপদলীয় কর্মী, যারা ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে একটি সহিংস বিপ্লব ঘটাতে চেয়েছিল।
এই আন্দোলনের আড়ালে বাংলাদেশকে এক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করা হয়। সরকারি স্থাপনা, প্রশাসনিক দপ্তর, গাড়ি, এমনকি স্কুল-কলেজ পর্যন্ত জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষ, আগুন, বোমা বিস্ফোরণ আর লুটপাটে গোটা দেশ অচল হয়ে পড়ে।
গণভবন লুট, ৫ আগষ্ট ২০২৪: জাতির অপমান
এতটাই ভয়াবহ রূপ নেয় এই সহিংসতা, যে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ষড়যন্ত্রকারী ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে গণভবনের ভেতরের আসবাবপত্র, নথিপত্র, এমনকি জননেত্রী শেখ হাসিনার ব্যবহৃত ব্যক্তিগত পোশাক ও খাদ্যসামগ্রী পর্যন্ত লুট করা হয়। রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রতীক এই স্থানে হামলা ছিল একটি স্পষ্ট বার্তা: তারা ক্ষমতা নয়, দেশ ধ্বংস করতে এসেছে।
৫ আগস্ট গণভবনে চুরি ও লুটপাট চালায় তথাকথিত ‘ছাত্র জনতা
বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, এই তথাকথিত আন্দোলনের নেপথ্যে ছিল আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় ষড়যন্ত্র। ২০২৪ সালের এই আন্দোলন ছিল কিছু লোভী রাজনৈতিক গোষ্ঠী, বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহল এবং ক্ষমতা-লোলুপ চক্রের সম্মিলিত প্রয়াস, যারা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ও ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষা করতে দেশের ভবিষ্যৎকে দখলে নিতে চেয়েছে।
এরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষুদ্রতম লোভ দমন করতে পারে না, অথচ দাবি করছে—তারা বাংলাদেশ চালাবে! জনতা প্রশ্ন তুলছে, যারা লুটপাট করে গণভবনের কাপড় পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে, তারা কীভাবে দেশের রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখবে?
এম কে, শাওন: লেখক, কলামিস্ট, অনলাইন এক্টিভিস্ট