প্রিন্ট এর তারিখঃ Sep 26, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Jul 27, 2025 ইং
চাঁদাবাজ রিয়াদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর গুলশানে সংরক্ষিত আসনের সাবেক এক সংসদ সদস্যের কাছে চাঁদাবাজির সময় হাতেনাতে আটক আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান (রিয়াদ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি। মন্ত্রণালয়ের সরকারি কমিশন সদস্য ছিলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।
রাশেদ খাঁন তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান, ছাত্র প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কেন্দ্রীয় নেতা বাগছাস (বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ)। ইতিমধ্যে বহিষ্কারও করেছে। এভাবে সব মন্ত্রণালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি রয়েছে। এরা সরকারের দাপটেই এসব চাঁদাবাজি করছে। পদ ব্যবহার করে নিয়োগ, তদবির, বদলি বাণিজ্য, মামলাবাজিসহ এমন কোনো কাজ নাই যে, তারা করছে না। সারা দেশে এসব ছাত্র প্রতিনিধি নামধারীরা কেন নির্বাচন চায় না, বুঝছেন? কারণ নির্বাচন হলে তো ওদের কোটি কোটি টাকার স্মার্ট চাঁদাবাজি থাকবে না। এজন্যই এরা বিচার ও সংস্কারের নামে ৫ বছরের আওয়াজটা জোরেসোরে দেয়। তার ফেসবুকে পোস্টে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে গরম গরম পোস্ট, বুঝছেন এবার ব্যাপারটা?!
এদিকে রাজধানীর গুলশানে চাঁদাবাজি করার অভিযোগে আটক আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার। তিনি লেখেন, আবদুর রাজ্জাক নামের যে ছেলেটা গ্রেপ্তার হয়েছে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে, সে পুলিশ সংস্কার কমিশনের মেম্বার। অর্থাৎ গুরুত্বের বিচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়ের সে লিস্টেড ছাত্র প্রতিনিধি। বাংলাদেশে যে কালচার চলে, তাতে সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত, এই পরিচয়েই কেউ অর্থ উপার্জন করতে পারে বলে মনে করি। এখানে তার মতো ব্যক্তিকে কীভাবে স্বরাষ্ট্র বিভাগের পুলিশ সংস্কার কমিশনের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সুপারিশ করল, এটা সামনে আনা প্রয়োজন। এটা খুব করে চাওয়া আমার।
তিনি লেখেন, জানে আলম অপু নামক ছেলেটা আগে থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনেক উচ্চবাচ্য করত, অনেকটা ঔদ্ধত্যের পর্যায়ে। তার বিরুদ্ধে নিজ জেলা জয়পুরহাটে অসংখ্য অভিযোগ এর আগে কানে এসেছে, যেহেতু রাজশাহী বিভাগীয় দায়িত্বে আমি ছিলাম। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সেসহ আরও কয়েকজন সেই হত্যাকাণ্ডের কারণ তাদের দাবির সঙ্গে না মেলা সত্ত্বেও তারা আন্দোলন করে এবং স্বরাষ্ট্র দপ্তরে যাতায়াত বৃদ্ধি করে। এখানে জানে আলম অপু শুধু নয়, ওর আশপাশে থাকা আরও দু-একজনের নামে এমন অভিযোগ এলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
তিনি আরও লেখেন, সর্বশেষে ইব্রাহিম হোসেন মুন্না নামক ছেলেটা এই চাঁদাবাজিতে অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এই নাম আসায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারটির যৌক্তিকতা শতভাগ ফুরিয়ে এসেছে। এর আগে সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা মহানগর কমিটি গোছানোতে ভূমিকা রেখেছে। সবচেয়ে বড় কথা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গত কয়েকদিন আগে হওয়া নির্বাচনে সে টপ অর্গানোগ্রামের একটি পদে ইলেকশন করে এবং পরে তার জায়গায় সে নাকি অন্য কাউকে সিলেক্ট করেছে, এই অজুহাত দিয়ে সে আর দায়িত্ব নেয়নি। এরকম অদ্ভুতুড়ে ঘটনা এর আগে জীবনেও প্রত্যক্ষ করিনি আমি।
এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব লেখেন, ইব্রাহিম হোসেন মুন্নার নামটি একেবারে সেন্ট্রালি কানেক্টেড এবং গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলেম অপুও সেন্ট্রাল নেতা। তাদের সঙ্গে অনেকেরই ভালো খাতির থাকা অস্বাভাবিক নয়। রিমান্ডে নিয়ে প্রকৃত কুশীলবদের বের করে আনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কেননা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার একটি ঐতিহাসিক ব্যানার। আমি এর আগেও জানিয়েছি এই ব্যানার আর থাকার প্রয়োজন নেই, যদিও এই ব্যানার প্রতিষ্ঠা করতে আমারও ভূমিকা ছিল।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাজধানীর গুলশানে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ BangladeshInsights.com