বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বেড়ে চলেছে সহিংসতা ও মব জাস্টিসের ঘটনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই ঘটনাগুলোর পেছনে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। অভিযোগ রয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মদতে এসব মব জাস্টিস ঘটাচ্ছে জামায়াত ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর।
অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনী পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিকল্পিতভাবে উসকানিমূলক ঘটনার জন্ম দেওয়া হচ্ছে। এর পেছনে জামায়াত-হিযবুতের সক্রিয়তা ও ইউনূসের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে একটি বিশৃঙ্খল চক্র কাজ করছে—যারা চায় নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে।
সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির অডিটোরিয়ামে জানালা-দরজা ভাঙচুর করে তৌহিদী জনতা নামে জামায়াত ও হিজবুতের নেতাকর্মীরা। স্থানীয়দের দাবি, এই ঘটনাও ছিল সংগঠিত মবের একটি অংশ—যার মূল উদ্দেশ্য পরিবেশ উত্তপ্ত করে প্রশাসনকে কোণঠাসা করা।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ধরনের জনতা-নির্ভর আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তাতে সুশীল সমাজের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রামে বাম সংগঠনের এক কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে এক নারীকে লাথি মারার ঘটনা এবং পরে অভিযুক্ত শিবির নেতাকে ফুলেল শুভেচ্ছা—এই দুই চিত্রই প্রশ্ন তোলে, এই ‘মব’ সংস্কৃতির উৎস কী?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর নির্বাচনের আগে এমন পরিবেশে ভোটাররাও তাদের ভোট ঠিকভাবে দিতে পারবে না। এতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধই থাকবে।
জাতীয় উৎসব ঈদেও মবের শাসন থেমে থাকেনি। টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিলেটের সীমান্তবর্তী উৎমাছড়া এলাকাতেও পর্যটকদের বাধা দিয়েছে জামায়াত ও এনসিপির নেতাকর্মীরা। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিনোদন ও ভ্রমণ পিপাসুদের আনন্দ-উৎসবের পথ।
এই ধরনের কর্মকাণ্ড স্পষ্ট করে যে, একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক কৌশল—নির্বাচন ঠেকাতে বা বিলম্বিত করতে সমাজে ভয়, বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মব সংস্কৃতি ও সহিংসতা যদি এখনই রোধ করা না যায়, তাহলে আসন্ন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। এমন প্রেক্ষাপটে পুরো জাতি একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে।
বিশ্লেষরা বলছেন, “দেশে এক নতুন ধরনের হাইব্রিড অরাজকতা শুরু হয়েছে। জামায়াত-হিযবুতের পুরনো কৌশল এবং তৃতীয় পক্ষের আর্থিক ও কৌশলগত সহায়তায় দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এসব চক্রান্ত রুখতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
মন্তব্য করুন