Insight Desk
প্রকাশ : Jun 22, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

ড. ইউনূস সম্পর্কে বিখ্যাত লেখক আহমদ ছফার সতর্কবার্তা

মি. ব্রাইট সরকার

রাজনীতির কাজটা হচ্ছে মিডিয়েট করা। ব্যবসার সাথে, বাণিজ্যের সাথে, শিক্ষার সাথে, সংস্কৃতির সাথে অর্থাৎ সমস্ত কিছুর মধ্যে সমন্বয় তৈরি করার ভূমিকা হচ্ছে রাজনীতির। কিন্তু আমাদের এখানে রাজনীতি হচ্ছে মহারাজের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আমি যেটা ভয় পাচ্ছি, এখানে পলিটিক্সটা যখন টোটাল রাইটিস্ট অরবিটের মধ্যে চলে যায় সেখানে অন্য কারো ভবিষ্যৎ থাকে না, চরম দক্ষিণপন্থীদের ছাড়া। এবং সকলে মিলে এরা চরম দক্ষিণপন্থী কোর্টের মধ্যে পলিটিক্সটা ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমার আশঙ্কা মৌলবাদীরাই তাদের আকাঙ্ক্ষাটা পূর্ণ করবে। আর অন্যদিকের এলার্মিং সাইড যেটা, প্রফেসর ইউনূসের মতো লোকেরা। 

বাংলাদেশের দুটি ক্ষেত্রে তিনি প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছেন। এক. বিদেশি আস্থা অর্জন করা এবং তাদের কাছ থেকে অর্থ আনা, দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের গরীব জনগণকে একটা ধনতান্ত্রিক উৎপাদন প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসা। 

এ রকম একজন লোক, বিদেশি অর্থে যার এই অবস্থা তাকে বিদেশি কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান করার কথা ভাবা এটা খুব অন্যায়। বিদেশিরা অনেক কিছুই চাইছে। অনেক কিছুই আমাদের করতে হচ্ছে। কিন্তু বিদেশিরা চাইছে বলে তাকে কেয়ারটেকার প্রধান করা-নীতিগতভাবে একজন লোকও  যদি এর প্রতিবাদ করে আমি সেই ব্যক্তি। বিদেশি টাকার ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল কোন ব্যক্তি এই দেশের কোন কল্যাণ করতে পারে না। তার বদলে হাসিনা খালেদার যতই দুঃশাসন হোক সেটাও আমি মেনে নিতে রাজি।

রাইসু: এগুলো কি আপনি ঈর্ষা থেকে বলছেন?

ছফা: ঈর্ষা থেকে বললেও ক্ষতি নেই। সত্যি বলছি কিনা, ন্যায্য বলছি কিনা সেটাই বড় কথা। অন্ততপক্ষে আমরা ফিল করতে চাই আমাদের পলিটিক্যাল স্ট্রাগলটা। একজন হাইকোর্টের বিচারক, এমনকী কূটকৌশলী ফয়েজকেও মেনে নিতে রাজি হব, তবুও ইউনূসকে না। গ্রামীণ গরিবদের শ্রমশক্তিকে দেশের ধনীরা কখনো ধনতন্ত্রের সঙ্গে কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক পুঁজির সঙ্গে যুক্ত করতে পারেনি। ইউনূস সাহেব এটাকে একটা পুঁজিবাদী শেপের মধ্যে নিয়ে এসেছেন।  ইউনূস সাহেবের কৃতিত্ব এটাই। এজন্যই আমেরিকা তথা পশ্চিমা দেশগুলো তাঁকে এভাবে অনর্গল পুরস্কার দিয়ে যাচ্ছে। 

এনজিও নিয়ে সতর্কবার্তা: 

বর্তমান পৃথিবীর যে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তাতে যেখানে বিশ্বব্যাংক যাবে, সেখানে এনজিও যাবে। বিশ্বব্যাংকে যদি আপনি এয়ারফোর্স ভাবেন, তবে এনজিওকে ভাবতে হবে ইনফেন্ট্রি হিসেবে। এরা হচ্ছে  একে অপরের পরিপূরক। বাংলাদেশের এনজিওরা একটা প্যারালাল অবস্থান নিয়েছে এবং সেটা  আশঙ্কাজনক মনে করি। সিভিল লিবার্টির নামে তারা রাষ্ট্র ক্ষমতার একটা অংশ দাবি করছে। সেটা আতঙ্কের এবং প্রগতিশীল রাজনীতির প্রধানতম অন্তরায় এনজিওগুলো ।

প্রথম দিকে এনজিওরা  যে কাজগুলো করেছে নারী জাগরণ গ্রামের জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করা, নতুন  টেকনিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা-এসব হল ইতিবাচক দিক। আর নেতিবাচক দিক হল এনজিওরা ম্যানফ্যাকচারিং এ চলে যাচ্ছে। যেমন অধ্যাপক ইউনূস, তিনি নিজে একজন শিল্পপতি বটে।

সূত্র: আহমদ ছফার সাক্ষাৎকার সমগ্র, পৃষ্ঠা-১১৬, ১১৭, ২৩৬

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিলেটে প্রকাশ্যেই পাথর লুট করছে বিএনপি নেতারা, প্রশাসনের নীর

1

বিএনপিকে জলাঞ্জলি দিয়ে এসেছে তারেক, গেইনার শুধুই ইউনুস

2

তারেক-ইউনূস বৈঠকের পর বিএনপিতে বেড়েছে মব সন্ত্রাস

3

৯ মাসে পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা

4

ইউনূসের পরিকল্পনায় বাংলাদেশ কী নতুন ৭১-এর মুখোমুখি

5

ডিএমপি কমিশনার ফের প্রমাণ করলেন, জঙ্গিদের মদদেই ক্ষমতায় ইউনূ

6

জুলাই আন্দোলন: গুজব, ষড়যন্ত্র আর দেশ বিক্রির কালো গল্প ফাঁস

7

ইউনূসের রাষ্ট্রীয় দুর্বলতায় বাড়ছে মন্দিরে হামলা; জঙ্গিবাদের

8

দলে ফিরলেন শামীম-নাঈম, ওয়ানডেতে প্রথমবার তানভির

9

নসিপি ও বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্মে নিরাপদ নয় নারী নেত্রীরা

10

কাফনের কাপড় পরে এনবিআরে ফের কলম বিরতি

11

মালয়েশিয়ায় আটক ৩৬ জঙ্গিকে নির্দোষ বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

12

উপদেষ্টা আসিফের মদদে কুমিল্লায় হিন্দু নারী গণধর্ষণের শিকার!

13

টাকা পাচারের প্রমাণ চেয়ে ইউনূসকে চ্যালেঞ্জ শেখ হাসিনার

14

১০ মাসেই অনিয়ম-দুর্নীতির রেকর্ড গড়ল ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরক

15

চোট থেকে ফেরার পথে বাংলাদেশের পেস ত্রয়ী

16

কারা ও পুলিশ হেফাজতে ২৬ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা

17

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাসে আইপিওশূন্য পুঁজিবাজার

18

ইউনূসের আশকারায় মবের রাজ হাসনাত, রুখবে কে?

19

মবকে বৈধতা দিল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

20