নিজস্ব প্রতিবেদক
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর কন্যা মনিকা ইউনূস সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়েছেন। মার্কিন সংগঠন সিং ফর হোপ (Sing for Hope)-এর একটি প্রকল্পের মাধ্যমে তারা সমকামী অধিকার প্রচারে যুক্ত—এমন অভিযোগ উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
এই সংগঠনের একটি পিয়ানো প্রকল্পে রংধনু রঙে রাঙানো একটি পিয়ানোতে বাংলায় লেখা ছিল—‘প্রেম হলো প্রেম’। অনেকেই এটিকে এলজিবিটিকিউ (LGBTQ) সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতির প্রকাশ এবং সমকামিতা উৎসাহিত করার প্রচারণা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে,পৃথিবীতে এত ভাষা থাকতে রঙধনু পিয়ানোর গায়ে বাংলায় কেন লেখা হলো-“প্রেম হলো প্রেম”?
নিশ্চয়ই পিয়ানো সরবরাহকারী “Sing for Hope”-এর মধ্যে কেউ বাংলাভাষী আছেন,অথবা বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত কেউ রয়েছেন-যিনি বিশ্বমঞ্চে বাংলাকে সমকামী সমকামী কমিউনিটির ভাষা হিসেবে উপস্থাপন করছেন,বাংলাদেশি সমকামীদের প্রতিনিধিত্ব করছেন?
উল্লেখ্য, জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে পালিত হয় প্রাইড মান্থ (Pride Month)—যেখানে এই ধরণের রঙ ও বার্তা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
মনিকা ইউনূস, যিনি একজন অপেরা গায়িকা এবং সমাজসেবী, এই সংগঠনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। বিভিন্ন সূত্র বলছে, ড. ইউনূস নিজেও সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কন্যা মনিকা ইউনূস ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে একটি ঘটনার পর বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন।
স্থানীয় পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, মনিকা রাত আনুমানিক ২টার দিকে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর সময় একটি গাড়িতে ধাক্কা দেন। এসময় তাঁকে পুলিশ অবরুদ্ধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, তিনি একজন নারী সঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদের কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই তাঁর সমকামিতার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু করেন এবং এটিকে ঘিরে বাংলাদেশের ধর্মীয় গোষ্ঠীর কিছু অংশ ড. ইউনূসের পারিবারিক মূল্যবোধ ও বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
একইসাথে সমালোচকরা বলেন, ড. ইউনূসের মতো একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের পরিবারে এমন আচরণ প্রমাণ করে যে, তিনি ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সামাজিক রীতিনীতি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। এমনকি কিছু ধর্মীয় বক্তা তাঁকে "নাস্তিক" বলে আখ্যায়িত করেছেন।
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সমকামী অধিকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। ২০১২ সালে উগান্ডায় দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি সমকামীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও বৈষম্যের বিরোধিতা করেন। সেই সময়ও বাংলাদেশের কিছু শহরে ছোট আকারের বিক্ষোভ হয়।
তখন কুমিল্লা, ঢাকা সহ বিভিন্ন শহরে কয়েক লাখ লিফলেট বিতরণ করা হয়, যেখানে ইউনূসের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। কিছু বিক্ষোভ থেকে তাঁর ফাঁসির দাবিও ওঠে।
বাংলাদেশের ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ী, সমকামিতা এখনো শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এর সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
সাংবাদিক তাসনিম খলিল গত বছর তাঁর এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “কথা হইলো মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে। এটা কি তার ইসলাম বিদ্বেষের প্রমাণ? আহমাদুল্লাহ হুজুররা তাইলে ইউনূস সাহেবের পদত্যাগ চান নাই কেন এখনও?”
ড. ইউনূস ও তাঁর কন্যা মনিকা ইউনূস নিজেদের “মানবাধিকারের পৃষ্ঠপোষক সাজালেও বাস্তবতা হলো—তারা সমাজে অবক্ষয়ের বীজ বপন করছেন। একদিকে ইসলামি মূল্যবোধের বিরুদ্ধে অবস্থান, অন্যদিকে সমকামিতার মতো ঘৃণ্য ও নীতিবিরোধী বিষয়কে “ভবিষ্যতের প্রগতিশীলতা” হিসেবে তুলে ধরার অপপ্রয়াস—তাদের প্রকৃত চরিত্র উন্মোচন করে।
মনিকা ইউনূসের নারীসঙ্গ, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে পুলিশি হেফাজতে যাওয়া, এসব কেবল ব্যক্তি আচরণ নয়—এটি একটি আদর্শগত অধঃপতনের প্রতিচ্ছবি। অথচ এই পরিবারের পিতা দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা! যারা নিজেদের পরিবারকেই সঠিক পথে রাখতে পারেন না, তাদের হাতে জাতির ভবিষ্যৎ কতটা নিরাপদ—সেই প্রশ্ন তোলাই আজ সময়ের দাবি।
ড. ইউনূসের প্রতি কিছু তথাকথিত ধর্মীয় গোষ্ঠীর সমর্থন আসলে দ্বিচারিতার প্রকাশ—যেখানে নিজের স্বার্থে নৈতিকতা ভুলে যাওয়া এখন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। জনগণ আর চোখ বন্ধ করে রাখবে না, যারা জাতিকে নৈতিক বিচ্যুতি ও পশ্চিমা দাসত্বের দিকে ঠেলে দেয়, তাদের মুখোশ খুলে দেওয়াই হবে সত্যিকারের প্রতিরোধ।
মন্তব্য করুন