নিজস্ব প্রতিবেদক :
শেখ হাসিনাকে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা থেকে সরানোর পেছনে অন্যতম ভূমিকা ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। এই সংগঠন থেকেই পরবর্তীতে তৈরি হয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সূত্র বলছে, রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াসহ এনসিপির বিভিন্ন নেতাদের পতিতার পেছনে বিল হয়েছে ৫১ কোটি টাকা। এনসিপির নেতাদের অত্যাচারে এখন লোকসানে রয়েছে পাঁচ তারকা হোটেলটি।
এ নিয়ে একটি টকশোতে কথাও বলেছেন বিএনপিপন্থী সাবেক ছাত্রনেতা মোশারফ আহমেদ ঠাকুর। তিনি বলেন, আমাদের ইন্টারকন্টিনেন্টাল লসে আছে। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করব না। ভবিষ্যতেও করব না। শিশু উপদেষ্টা যে অপকর্ম করছে সেগুলোর জন্য আমরা প্রতিশোধ গ্রহণ করব না। তবে তারা আর্থিক অপরাধের জন্য দুদকের মুখোমুখি হতে পারে। যার ৫ বিঘা জমি নাই, তার দাদা নাকি জমিদার!
বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্লাটফর্ম থেকে পদত্যাগ করেছেন সংগঠনটির মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি বলেন, 'প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্র হিসেবে যাওয়ার পরেই টের পাই সংস্কার, জুলাই, শহীদ, আহত এসব মুখের বুলিমাত্র। শুধু আমি না, অনেক ছাত্ররাই পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত হয়েছিল। সবার সাথে শুধু ছলনা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, যে মানুষগুলার সঙ্গে আমি পাশে দাঁড়ায়ে মিটিং করছি, মিছিল করছি তারাই পরিকল্পতিভাবে জুনিয়রদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে Smear campaign চালায়। মানুষ বাইরে যত ভালো সাজার চেষ্টা করুক ভিতর থেকে কতটা ছোটলোক হতে পারে আমি হাড়ে হাড়ে টের পাই ঐ সময়গুলাতে। এই সো কল্ড সহযোদ্ধারা মানুষকে টিস্যু পেপারের মতো ব্যবহার করে, প্রয়োজন শেষ হলে ছুঁড়ে ফেলতে এক মুহূর্তও লাগে না। আমি মার্চ-এপ্রিল মাসে এই প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি পোকার মতো ভিতর থেকে প্ল্যাটফর্মকে সুবিধাবাদীরা খেয়ে ফেলেছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে উঠেছে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মাধ্যমে দুর্নীতিতে জড়ানোর অভিযোগ। তাঁর একান্ত সচিব মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হলেও এখনো দুদক দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। একই সঙ্গে, আসিফের পিতা বিল্লাল হোসেনের ঠিকাদারি লাইসেন্স গ্রহণ, এবং হিযবুত তাহরীর সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে উঠেছে নৈতিক প্রশ্ন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সাবেক একান্ত সচিব আতিক মোর্শেদের বিরুদ্ধেও উঠেছে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদের ১৫০ কোটি টাকা বেহাত করার অভিযোগ। পাশাপাশি, সেখানে নিজের স্ত্রী ও স্বজনদের চাকরি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। তবে এসব অভিযোগের তদন্তে দুদকের কার্যকর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত যে সংগঠন দুটোর মধ্যে স্বচ্ছতা ও আদর্শচ্যুতির সংকট রয়েছে। আন্দোলনের নামে ভণ্ডামি ও ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতির কারণে শিক্ষিত তরুণরাও হতাশ হয়ে পড়ছেন। এক সময় যারা পরিবর্তনের আশায় এগিয়ে এসেছিল, তারা এখন নিজেই পরিবর্তন চায়।”
মন্তব্য করুন