জেনেভায় জাতিসংঘের সদরদফতরে ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত এক ব্যতিক্রমী পোস্টার প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সংখ্যালঘু নিপীড়নের চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা হয়। ৫৯তম জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের নিয়মিত অধিবেশনের ফাঁকে এই প্রদর্শনীটির আয়োজন করে জেনেভাভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন International Forum for Secular Bangladesh, Bangladesh Minority Alliance (Switzerland Chapter) এবং Tumuku Development and Cultural Union।
প্রদর্শনীতে মোট ৩০টি পোস্টার স্থান পায়, যেখানে বাংলাদেশের বর্তমান ইউনূস সরকারের সময়কালে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা চিত্র উপস্থাপন করা হয়। পাঁচটি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়: সংখ্যালঘু নির্যাতন, সাংবাদিক নির্যাতন, চিন্ময় দাস প্রভুর মুক্তির দাবি, নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতা এবং শেখ হাসিনাকে 'মানবতার মা' হিসেবে তুলে ধরা।
প্রদর্শনীটি সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল এবং এই সময়ের মধ্যে হাজারো বিদেশি কূটনীতিক, এনজিও কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। অনেকেই বাংলাদেশে সংঘটিত ধর্ষণ, দমন-পীড়ন ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ছবি দেখে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পশতুন মানবাধিকার নেতা ফজলুর রহমান আফ্রিদি বলেন, “এমন বর্বরতা দেখে আমার ভাষা হারিয়ে গেছে। ইউনূস শান্তি পুরস্কারের অপমান করেছেন।”
সুইস সোশ্যালিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সিলভাঁ থেভো প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের অবস্থা নিয়ে আমি গভীরভাবে চিন্তিত, আমরা দলীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।”
জার্মান মানবাধিকার কর্মী ক্লাউডিয়া ওয়াডলিখ বলেন, “গত ১১ মাস ধরে বাংলাদেশে রাজনৈতিক নিপীড়ন, সংখ্যালঘু নির্যাতন, প্রেস স্বাধীনতা হরণ করে দেশকে গৃহযুদ্ধের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।”
জেনেভা ভিত্তিক আরো কয়েকজন মানবাধিকার কর্মী, যেমন আলিনা প্রিন্সেস, ড. রাভুরি বলারাজু, নিকোলা শেয়ারড, আসলাম আনসারী, ড. রোহিনি—তাঁরাও বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ দ্রুত একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। জনগণ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলছে: ‘আমরা আগের চেয়ে ভালো ছিলাম’, মানে তারা শেখ হাসিনার আমলকেই বেশি নিরাপদ ও স্থিতিশীল মনে করছে।”
মন্তব্য করুন