নিজস্ব প্রতিবেদক
মানবাধিকার সংস্থা অধিকার-এর এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় বিচারবহির্ভূত হত্যার সংখ্যা বেড়ে ৪০-এ পৌঁছেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হয়।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করে। তবে ক্ষমতা গ্রহণের পর মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নতির পরিবর্তে আরও অবনতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
অধিকার জানায়, নিহত ৪০ জনের মধ্যে ১৯ জনকে গুলি করে, ১৪ জনকে নির্যাতন করে এবং সাতজনকে হেফাজতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। কেবল জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ সময়ের মধ্যেই ১১ জন বিচারবহির্ভূতভাবে নিহত হয়েছেন—যাদের মধ্যে সাতজন যৌথবাহিনী, তিনজন পুলিশ ও একজন সেনাসদস্যের হাতে প্রাণ হারান বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, একই সময়ে ২৭ জন কারাগারে মারা গেছেন, যা অন্তর্বর্তী সরকারের ১৩ মাসে মৃত্যুর সংখ্যা ৮৮-এ উন্নীত করেছে।
এছাড়া ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে অন্তত ৩৫ বাংলাদেশি নিহত হওয়ার তথ্যও দিয়েছে অধিকার, যার মধ্যে ১০ জনকে হত্যা করা হয়েছে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়কালে।
রাজনৈতিক সহিংসতাও অন্তর্বর্তী সরকারের সময় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আগস্ট ২০২৪ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ২৮১ জন রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৪৬টি ঘটনা ঘটেছে সর্বশেষ তিন মাসে।
এ সময় ৬৮৭ নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং ১৫৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, যা মানবাধিকার পরিস্থিতির ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে স্বচ্ছ তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের উদ্যোগ না নেওয়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের সংস্কৃতিকে আরও গভীর করছে। তারা সরকারের প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর স্বাধীন তদন্ত ও আইনি জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন