নিজস্ব প্রতিবেদক
ছাত্র-জনতা ও পুলিশ গণহত্যা দিবসের প্রথম বার্ষিকীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছরের শাসনকালের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি ২০২৪ সালের আগস্টের ঘটনাকে "বিদেশি মদদপুষ্ট জঙ্গিদের সহিংস ক্ষমতা দখল" হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এর ফলে দেশ ১৯৭১-পূর্ববর্তী অন্ধকার যুগে ফিরে গেছে।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সজীব ওয়াজেদ জয় অভিযোগ করেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে শুরু হওয়া ঘটনা একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত ছিল।
তিনি বলেন, "কোটা বাতিলের পরেও আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো হয়। জামায়াত-শিবিরের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস, জেল ভেঙ্গে জঙ্গি ছিনতাই এবং পুলিশ হত্যার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করা হয়েছে।"
বর্তমান সরকারের শাসনকালকে "কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের নামে প্রহসন" আখ্যায়িত করে জয় বলেন, "ড. মুহম্মদ ইউনুস নিজের ও তার প্রতিষ্ঠানের কর মওকুফ করেছেন এবং ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন লাইসেন্স নিয়েছেন।"
তিনি আরও অভিযোগ করেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে ক্ষমতায় আসা ছাত্র সমন্বয়কদের অনেকেই এখন কোটিপতি।
বিবৃতিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, "সারাদেশে অপমৃত্যুর মিছিল চলছে। মবের আতঙ্কে মানুষ নিরাপত্তাহীন। চাঁদা না দিলে বা ভিন্নমত পোষণ করলে 'ফ্যাসিবাদের দোসর' তকমা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে।"
তিনি উল্লেখ করেন, প্রথম ৭ মাসে ১১৯ জন মানুষ তথাকথিত 'বৈষম্যবিরোধী মবের' হাতে প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও, গোপালগঞ্জে সমাবেশের নামে হত্যাকাণ্ড ও লাশ গুমের অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
অর্থনীতির ভঙ্গুর অবস্থা নিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, "শেয়ারবাজার থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে, বৈদেশিক বিনিয়োগ গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ১৫০টির বেশি শিল্প কারখানা বন্ধ হওয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার হয়েছে।"
তিনি আরও অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন চুক্তি করে দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমাদের ৪ লক্ষাধিক নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় জেলে। সংসদের অর্ধেকের বেশি সদস্য কারাবন্দী। তবুও আমাদের নেতাকর্মীরা রাজপথে ও অনলাইনে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার।"
তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ে বলেন, "এই শক্তিই আওয়ামী লীগের মূল শক্তি। এই শক্তি নতুন ভোর নিয়ে আসবে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার পুনর্জাগরণ ঘটাবে।"
মন্তব্য করুন