নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের আলোচিত আলোকচিত্রী ও অধিকারকর্মী শহীদুল আলম আবারও আলোচনায়। এবার তিনি “গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ইতালিয়া” নামের একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে গাজা অভিমুখে যাত্রা করেন। উদ্যোগটির ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া, তবে এর পেছনে অন্য উদ্দেশ্যের অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র অনুযায়ী, শহীদুল আলম দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক মহলে রাজনৈতিক যোগাযোগ বজায় রেখেছেন এবং বাংলাদেশের ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ঘটনাপ্রবাহে অন্তর্ভুক্ত তথাকথিত আন্দোলনের পেছনে আর্থিক সহায়তা ও প্ররোচনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার এই অভিযানে শহীদুল আলমসহ বিভিন্ন দেশের অধিকারকর্মীরা অংশ নেন। তবে শুক্রবার ইসরায়েলি নৌবাহিনী ‘ম্যারিনেট’ নামের শেষ জাহাজটিকে আটক করে। এর আগে একই নৌবহরের অন্য সব জাহাজও আটক করা হয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “The Israeli military intercepted the last boat in an aid flotilla attempting to reach blockaded Gaza on Friday, a day after stopping most of the vessels and detaining some 450 activists including Swedish campaigner Greta Thunberg.”
ইসরায়েলি নৌবাহিনী জানিয়েছে, আটক জাহাজটি বর্তমানে আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে নিউ এজ পত্রিকাকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় শহীদুল আলম জানান, তারা সব বাধা সত্ত্বেও গাজায় পৌঁছানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স স্পষ্ট করে জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সব নৌযানই ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে—যা শহীদুল আলমের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মানবতার নামে এমন কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করছে। কেউ কেউ একে “প্রচারমুখী অভিযান” বলে আখ্যা দিয়েছেন, যার মাধ্যমে মূলত আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় আলোচনায় আসাই ছিল লক্ষ্য।
বাংলাদেশে অতীতে বহু রকমের বিভ্রান্তিমূলক প্রচার ও নাটকীয়তা দেখা গেছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো “আন্তর্জাতিক ধাপ্পাবাজির” নতুন ধারা তৈরি করেছে, যেখানে মানবতার মুখোশের আড়ালে রাজনৈতিক প্রচারণা ও ব্যক্তিগত প্রচ্ছন্ন উদ্দেশ্য কাজ করছে।
একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষকের ভাষায়—“এটা যেন এক সুপরিকল্পিত নাটক। নৌযান আটক, ভিডিও বার্তা, মিডিয়া কাভারেজ—সবকিছু এমনভাবে সাজানো যেন জনমনে বিভ্রম তৈরি হয়।”
শেষ পর্যন্ত, গাজায় পৌঁছানো সম্ভব না হলেও, শহীদুল আলম ও তাঁর সহযাত্রীদের এই যাত্রা এখন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক প্রচারণা উভয় ক্ষেত্রেই নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
মন্তব্য করুন