Insight Pulse
প্রকাশ : Oct 23, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা: আইনবহির্ভূত পদক্ষেপে সার্বভৌমত্বের চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বিচারিক পদক্ষেপ নিয়ে আইন বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, এটি সংবিধান ও Army Act, 1952-এর পরিপন্থী এবং দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত।

আইনজীবীরা মনে করছেন, সেনা সদস্যরা সাধারণ নাগরিক নন। তারা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত একটি বিশেষ বাহিনীর অংশ এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তা Army Act-এর আওতায় সেনাবাহিনীর নিজস্ব আদালতেই নিষ্পত্তি হওয়া উচিত এটাই সংবিধান ও প্রচলিত আইনের বিধান।

ARMY ACT যা বলছে

Army Act, 1952-এর Section 59(2) অনুযায়ী, কোনো কর্মরত সেনা সদস্য যদি off-duty অবস্থায় কোনো civilian-এর বিরুদ্ধে rape, murder বা culpable homicide ঘটান, তবে সেই অপরাধের বিচার করার এখতিয়ার সেনাবাহিনীর নয়; বরং তা civil court-এর আওতায় পড়ে। তবে এই ধারা কেবল তখনই প্রযোজ্য, যখন ঘটনাটি ঘটে off-duty অবস্থায়।

এখানে মূল প্রশ্ন যেসব সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে mass killing বা murder-এর অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা ঘটনার সময় on duty ছিলেন নাকি off duty? সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, জুলাই মাসে অভিযুক্ত কর্মকর্তারা সকলেই on-duty ছিলেন এবং তারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ফলে তাদের বিরুদ্ধে civil court-এ মামলা চালানো আইনবহির্ভূত ও সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

দায়িত্ব পালনের সময় সংঘটিত মৃত্যু ‘MURDER’ নয়

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো সেনা সদস্য যদি দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ, বিক্ষোভ দমন বা নিরাপত্তা অভিযান চলাকালে অস্ত্র ব্যবহার করেন, তবে সেটি তার official duty হিসেবে গণ্য হয়। এই অবস্থায় সংঘটিত মৃত্যু সাধারণ হত্যা নয়; বরং এটি officially sanctioned use of force অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় সংঘটিত মৃত্যু।

DGFI ও RAB কর্মকর্তারাও ARMY ACT-এর অধীন

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের কেউ কেউ DGFI বা RAB-এর মতো সংস্থায় secondment বা deputation-এ ছিলেন। এ অবস্থাতেও তারা Army Act-এর আওতার বাইরে নন। যদিও Army Act-এ “disappearance” শব্দটি নেই, তবুও এর Sections 41–45-এর অধীনে misuse of authority, conduct unbecoming এবং offence against discipline-এর মতো অপরাধে কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে তাদের বিচার করা সম্ভব।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীকে টার্গেট করার অভিযোগ

সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও দায়বদ্ধতা উপেক্ষা করে civil court-এর মাধ্যমে মামলা পরিচালনা একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও আইনবহির্ভূত পদক্ষেপ। তাদের অভিযোগ, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রশাসনের ভেতরে তাইজুল গোষ্ঠী ও জামায়াত-শিবিরপন্থী চক্র প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে, যা দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হতে পারে।

আইন বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, “সেনাবাহিনীর মতো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন হস্তক্ষেপ কেবল তাদের শৃঙ্খলাই ভেঙে দেয় না, বরং জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করে।” তারা দ্রুত এই আইনবহির্ভূত পদক্ষেপ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গোপনে সেনাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন ওয়েস্টিনে মৃত পাওয়া সেই মা

1

চীনের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি, হুকির মুখে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব

2

চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধের হুমকি: নতুন ট্যারিফে ক্ষোভে ব্যবসায়ী

3

কারাগার থেকে এইচএসসি পাস: অদম্য তারুণ্যের প্রতীক সিলেটের আরা

4

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় ২০২৪ সালে বাস্তুচ্যুত এক লাখ ৫৯

5

শুল্ক নিয়ে জাতির চোখে ধুলা দিল ইউনূসের প্রেস সচিব

6

নির্বাচন কেমন হতে পারে ইসিতে নমুনা দেখাল বিএনপি

7

জাতীয় নেতা তোফায়েল আহমেদ এখনো জীবিত, তবে অবস্থা ক্রিটিক্যাল

8

'নাগরিকের জীবন রক্ষায় রাষ্ট্র ব্যর্থ'- আসকের উদ্বেগ

9

গোপালগঞ্জের এনসিপি সমাবেশে বহিষ্কৃত এএসআই রঞ্জু, ছিলেন ফায়ার

10

পরিবেশবাদীর আড়ালে চাঁদাবাজি করা রিজওয়ানার এবার মব নিয়ে মি

11

ভোট না দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন ইউনূস, নতুন অস্ত্র পিআর পদ্ধতিত

12

সেনাবাহিনীর বন্দুকের মুখে ডাকসু নির্বাচন; শিবিরের ভুয়া প্রচা

13

তবে কি সেনাবাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দেশ

14

রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর নৃশংসতা, আন্তর

15

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে

16

ইউনূসে হতাশ বাংলাদেশ, জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার

17

রাষ্ট্রীয় বৈধতা পেল জঙ্গিবাদ, ‘রাজনৈতিক সম্পদ’ হিসেবে দেখছে

18

গোপালগঞ্জকে অশান্ত করতে এনসিসি ও ইউনূস গংয়ের পরিকল্পিত হত্যা

19

দলে ফিরলেন শামীম-নাঈম, ওয়ানডেতে প্রথমবার তানভির

20