নিজস্ব প্রতিবেদক
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, টঙ্গীর টি অ্যান্ড টি কলোনি জামে মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ মোহেববুল্লাহ মিয়াজী নিজেই পায়ে শিকল বেঁধে মিথ্যা অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ইসকনকে (ISKCON) জড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে ঘটনাটি পরিকল্পনা করেছিলেন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মোহাম্মদ তাহেরুল হক চৌহান বলেন, “মোহেববুল্লাহ অপহরণের যে গল্প বলেছেন, তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তিনি নিজেই নিজের পায়ে শিকল লাগিয়ে শুয়ে ছিলেন।”
পুলিশের তথ্যমতে, ২২ অক্টোবর রাতে মুফতি মোহেববুল্লাহ পঞ্চগড়ের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ লাইনসের আশপাশে ঘোরাঘুরি করেন এবং পরে রাস্তায় পাওয়া একটি শিকল পায়ে বেঁধে রাস্তার পাশে শুয়ে পড়েন। পরদিন সকালে স্থানীয় লোকজন তাঁকে শিকলবন্দি অবস্থায় দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।
এর আগে, ২৪ অক্টোবর টঙ্গী পূর্ব থানায় মোহেববুল্লাহ নিজেই একটি অপহরণ মামলা করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, “২২ অক্টোবর সকালে হাঁটতে বের হলে একটি অ্যাম্বুলেন্স আমার পথরোধ করে এবং আমাকে অপহরণ করে নির্যাতন চালায়।” কিন্তু পুলিশের তদন্তে সেই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজে কোনো অ্যাম্বুলেন্স বা অপহরণের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
পুলিশের দাবি, মুফতি মোহেববুল্লাহ তাঁর সাজানো “অপহরণ” ঘটনার মাধ্যমে ইসকনের বিরুদ্ধে দোষারোপ করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, ইসকনের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে সরকারি স্বীকৃতি বাতিলের দাবিকে জোরদার করা। তবে তদন্তে ইসকনের কোনো সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলেনি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান বলেন,“মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। কেউ প্ররোচনামূলকভাবে তাঁকে এই কাজে উৎসাহিত করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ মিললে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে মিথ্যা মামলা দায়ের ও ধর্মীয় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য করুন