নিজস্ব প্রতিবেদক
ইউনূস সরকারের আমদানিনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে দুবাই হয়ে ভারতীয় চাল কেনার সিদ্ধান্ত।
খাদ্য অধিদপ্তরের সংগ্রহ বিভাগের পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, “চাল সরবরাহকারীর অফিস দুবাইয়ে, কিন্তু সোর্স আসলে ভারত।” অর্থাৎ, কাগজে কলমে দুবাই থেকে আমদানি দেখানো হলেও চাল এসেছে ভারত থেকেই।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন অনুযায়ী, প্রতি টন ৩৫৫.৯৯ ডলার দরে দুবাইয়ের মেসার্স ক্রিডেন্টওয়ান এফজেডসিও থেকে ৫০ হাজার টন চাল কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ২১৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। একই সঙ্গে মিয়ানমার থেকেও ৫০ হাজার টন আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মূল্য প্রতি টন ৩৭৬.৫০ ডলার। সব মিলিয়ে এক লাখ টন চাল কিনতে ব্যয় হবে প্রায় ৪৪৬ কোটি টাকারও বেশি।
অথচ খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১৫ লাখ টনেরও বেশি চাল মজুদ রয়েছে, যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, যখন পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে, তখন এই অতিরিক্ত আমদানির প্রয়োজন কেন।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ইউনূস সরকারের সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিকভাবে অযৌক্তিক ও কূটনৈতিকভাবে বিভ্রান্তিকর। সরাসরি ভারত থেকে চাল আনলে খরচ কম পড়ত, সময়ও বাঁচত। তাদের মতে, তৃতীয় দেশকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বেছে নেওয়া এক ধরনের দেখনদারি ভারতবিদ্বেষ, যার ফল ভুগতে হবে দেশের সাধারণ জনগণকেই।
একজন অর্থনীতি বিশ্লেষক মন্তব্য করেন, “ভারতকে এড়িয়ে গিয়ে দুবাইয়ের নাম ব্যবহার করা মূলত জনগণকে বিভ্রান্ত করার কৌশল। এতে সরকারের ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু বাস্তবে লাভ হচ্ছে না।”
বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাস্তববাদী সম্পর্কের পরিবর্তে আবেগনির্ভর নীতি গ্রহণ করা বিপজ্জনক। তারা বলেন, “ভারতের চাল ঘুরে ঘুরে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসছে। এটি আত্মপ্রবঞ্চনার এক বাস্তব উদাহরণ।”
দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনূস সরকারের এই নীতির ফলে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি আরও চাপের মুখে পড়বে এবং জনগণের ওপর ব্যয়ভার বাড়বে।
মন্তব্য করুন