নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের পাঁচবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কথোপকথন প্রকাশের পর বিবিসি বাংলার নিরপেক্ষতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। আওয়ামী লীগের অভিযোগ, এই প্রতিবেদনটি ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সম্পাদিত বিকৃতি, যার মাধ্যমে শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি নষ্টের আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চালানো হয়েছে।
দলের দাবি, বিবিসি বাংলার এই প্রতিবেদনের পেছনে কাজ করছে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আন্তর্জাতিক পিআর টিম। লিকড ইমেইল ও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যেও দেখা গেছে, লন্ডনভিত্তিক কিছু সাংবাদিক ও পিআর ফার্ম একযোগে “হাসিনা-বিরোধী ন্যারেটিভ” চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগেও বিবিসি বাংলার বিরুদ্ধে একাধিকবার পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদনের অভিযোগ উঠেছে।
২০২৪ সালে “সরকারি হেলিকপ্টার থেকে ছাত্রদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে” শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টে ব্যবহৃত ভিডিওটি ছিল ২০১৩ সালের পুরনো ফুটেজ, যেখানে কোনো হেলিকপ্টার বা গুলি চালনার প্রমাণ ছিল না। প্রতিবেদনটি পরে চুপিসারে সরিয়ে ফেলা হলেও বিবিসির পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা বা ক্ষমা চাওয়া হয়নি। একইভাবে শেখ হাসিনার নির্দেশে “গণহত্যা” ঘটেছে এমন অভিযোগও আওয়ামী লীগ “তথ্যবিকৃতি” হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকারি হিসেবে নিহতের সংখ্যা ছিল ৭৪৯ জন, কিন্তু বিবিসি প্রতিবেদনে এক হাজারের বেশি দেখানো হয় কোনো যাচাই ছাড়াই এনসিপি সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে।
এছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়কে “পলাতক আসামি” বলা এবং শেখ হাসিনার ভারতে যাত্রাকে “পালানো” হিসেবে উপস্থাপন করার ঘটনাও দলটি ‘ইচ্ছাকৃত বিভ্রান্তি’ হিসেবে দেখছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক আমিনুল হক বলেন, “লন্ডনে ট্রাম্পের ভাষণ সম্পাদনার জন্য বিবিসির শীর্ষ কর্মকর্তারা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিবিসি এখনো দায় এড়াচ্ছে। এটাই দ্বিচারিতা।”
আওয়ামী লীগের দাবি, বিবিসি বাংলার পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্র চলছে। তারা বিবিসির কাছে ভুল স্বীকার, প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়া, স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন এবং ইউনূসের পিআর টিমের সঙ্গে সম্পর্ক প্রকাশের দাবি জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন