নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকার উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ভয়াবহ প্রাণহানির পাশাপাশি তথ্য গোপনের অভিযোগে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে সরকার এবং তত্ত্বাবধায়ক কাঠামোর শীর্ষপর্যায়েই চক্রান্তের অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষ সূত্র বলছে, বিমান বিধ্বস্তে নিহত শিক্ষার্থীদের মরদেহ লুকিয়ে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছিল যমুনায় একটি গোপন বৈঠকে। পরিকল্পনার মূল হোতা হিসেবে নাম উঠেছে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলমের।
সূত্র মতে, বিমান বিধ্বস্তের পরপরই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় শুরু হয় মরদেহ গোপনের প্রক্রিয়া। সেই নির্দেশ বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন আসিফ নজরুল, ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ছিল—ঘটনার প্রকৃত ভয়াবহতা আড়াল করে জনরোষ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সরকার ও সংশ্লিষ্টদের দায় থেকে রক্ষা করা।
রাতে চলে গোপন মরদেহ অপসারণ, বাধা দেওয়া হয় সাংবাদিকদের
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় আইএসপিআর থেকে জানানো হয়েছিল যে রাত ৮টার মধ্যে উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হবে। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত—বিশেষ করে রাত ২টার দিকেও—একাধিক অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
সেই সময় সাংবাদিকদের ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে সরিয়ে রাখা হয়। ছবি তোলা ও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টাকেও বাধা দেওয়া হয়।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, “বিমানটি সরাসরি দুটি ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ে। সেখানে অন্তত ৬০ জন শিক্ষার্থী ছিল। আমি নিজেই ২৫টি মরদেহ বের করেছি। অথচ এক সেনা কর্মকর্তা বলছিলেন মাত্র দুই-তিন জন মারা গেছে। সাংবাদিকদের কিছু বলার চেষ্টা করলেই আমাদের ধমকানো হয়েছে।”
ছাত্র-জনতার ক্ষোভে উত্তাল উত্তরা, তদন্তের দাবি জোরালো
বিমান দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যা গোপনের অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তরা ও আশপাশের এলাকা। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে সাধারণ মানুষও।
তারা বলছে, “এটা শুধুমাত্র দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি রক্তচাপা দেওয়ার চক্রান্ত। আমরা প্রকৃত সংখ্যা, নাম এবং মরদেহের তথ্য চাই।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষায়, “যদি এই অভিযোগ সত্য হয় যে শিক্ষার্থীদের মরদেহ পরিকল্পিতভাবে গুম করা হয়েছে, তাহলে তা শুধু মানবিক নয়, রাষ্ট্রীয় নৈতিকতারও চরম লঙ্ঘন। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে এমন কিছু হয়ে থাকলে তা বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি রাখে।”
মন্তব্য করুন