Insight Desk
প্রকাশ : Jul 31, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

পালানোর আগে ব্যাংক ফাঁকা করার গোপন মিশনে ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের কার্যক্রম নিয়ে যখন জনগণের আস্থা চরমভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে, তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘নিরাপদ সেফ এক্সিট’ নেওয়ার পরিকল্পনা ঘিরে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন ও উদ্বেগ। এর মধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো এক সতর্কবার্তায় সম্ভাব্য সাইবার হামলার শঙ্কা প্রকাশিত হওয়ায় নতুন করে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

সাধারণ সাইবার সতর্কবার্তার আড়ালে এবার যে গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বিস্মিত নন কেউই। কারণ, দেশের অর্থনীতির দায়িত্বে থাকা কথিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের দেশত্যাগ সংক্রান্ত গুঞ্জন, তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধে উঠা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এবং একই সময়েই ব্যাংক খাত নিয়ে হঠাৎ সতর্কতা এসব কিছু মিলেই এক অশুভ পরিকল্পনার আলামত স্পষ্ট করছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনুসের নেতৃত্বে চলমান ছদ্ম প্রশাসন ইতোমধ্যেই রাষ্ট্রের আর্থিক খাতকে চরম দুর্বল করে ফেলেছে। ব্যাংকিং খাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিপর্যয়, পেমেন্ট গেটওয়ের ওপর হ্যাকারদের আগ্রাসন, এবং ডিজিটাল অবকাঠামোতে বিনিয়োগ না থাকা এসব কৌশলগত দুর্বলতা কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই হঠাৎ সাইবার হুমকির বার্তা নিছক নিরাপত্তা প্রস্তুতি নয় বরং রাষ্ট্রীয় ব্যাংক খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করার পূর্বপ্রস্তুতি। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে, জুলাই মাসজুড়ে ইউনুসপন্থী বেশ কিছু অনলাইন পেমেন্ট চ্যানেলে অস্বাভাবিক অঙ্কের লেনদেন শনাক্ত হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং আইনের পরিপন্থী। অর্থ পাচারচক্রের আন্তর্জাতিক সংযোগ এবং দেশে থাকা ভেতরের দালালদের সহযোগিতায় একটি সুপরিকল্পিত চক্র রাষ্ট্রীয় অর্থভাণ্ডার ফাঁকা করতে সক্রিয়। ৩০ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের আইসিটি বিভাগ থেকে পাঠানো ওই অফিসিয়াল চিঠিতে বড় ধরনের সাইবার হামলার পূর্বাভাস দেওয়া হয়। যদিও এটিকে সাধারণ সতর্কতা বলা হলেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস।

এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই হুঁশিয়ারি আসলেই ভবিষ্যতের কোনো হুমকি রুখতে দেওয়া হয়েছে, না কি অর্থচুরির ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে? বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই সময় জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংকিং ও ডিজিটাল পেমেন্ট সেক্টরের সব ধরনের লেনদেন ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার খতিয়ে দেখার। প্রয়োজনে বিশেষ তদন্ত কমিটি বা টাস্কফোর্স গঠন করে চক্রটির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই ছদ্ম প্রশাসন পরিকল্পিতভাবেই রাষ্ট্রীয় ব্যাংকিং খাতকে দুর্বল করে তুলেছে। দীর্ঘদিন ধরে ডিজিটাল অবকাঠামোয় বিনিয়োগ না করে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা উপেক্ষা করে, এবং বিদেশমুখী লেনদেনে নজরদারির অভাবে একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, এই "সাইবার সতর্কতা" আসলে অর্থ পাচারের কৌশলগত প্রস্তুতির অংশ হতে পারে।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, জুলাই মাসজুড়ে ইউনূসপন্থী কিছু অনলাইন পেমেন্ট চ্যানেলে অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে, যা মানি লন্ডারিং আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। আন্তর্জাতিক পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক এজেন্ট ও দেশের ভেতরে থাকা দালালদের মাধ্যমে একটি চক্র বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করতে সক্রিয় রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে রাজনৈতিক দিক থেকেও চাপে রয়েছে ইউনূস সরকার। বিশ্বমঞ্চে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এখনও বাংলাদেশের জন্য শুল্ক ছাড় বহাল রাখেনি, যা চাপ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। একই সঙ্গে দেশে এখনও মানবিক করিডোর বাস্তবায়ন না হওয়ায় ইউনূস সরকারের কূটনৈতিক অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে। জামায়াত বাদে অন্যান্য ইসলামী দলের বিরোধিতাও ইউনূসের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।

সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসের দেশে অবস্থান নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। সূত্র জানায়, তিনি দ্রুত ফ্রান্সে ফিরতে চাইছেন। কারণ, আমেরিকা পরিকল্পনার কিছুই এখনও বাস্তবায়ন করতে পারেনি এই সরকার। সেই সঙ্গে নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় নিরাপদ প্রস্থান নিশ্চিত করাই তার প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠেছে।

 ইউনূসের সমর্থনপুষ্ট দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’ নিয়েও বিস্তর বিতর্ক রয়েছে। নৈতিক রাজনীতির কথা বলে আত্মপ্রকাশ করলেও দলটি এখন চাঁদাবাজি, অর্থ কেলেঙ্কারি এবং দুর্ব্যবস্থাপনার অভিযোগে বিদ্ধ। জুলাইয়ের ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি ঘিরে বিভিন্ন জেলায় ৫০ লাখ টাকার বেশি চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অথচ ঘোষিত নাগরিক তহবিল মাত্র ২ কোটি টাকা, যা প্রশ্ন তুলেছে দলের স্বচ্ছতা নিয়ে।

সবশেষ, গুলশান-২ এলাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা চাইতে গিয়ে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ তিন নেতা পুলিশের হাতে আটক হওয়ার ঘটনাও এনসিপিকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদরা। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এক সেমিনারে বলেন, “সরকারের সময় শেষের পথে। এখন এক্সিট পলিসি ও দায়বদ্ধতার প্রকাশ দরকার।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান পদক্ষেপগুলো পরবর্তী সরকার কীভাবে গ্রহণ করবে, তা নির্ভর করবে এখনকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ওপর।”

শেষ পর্যন্ত পালানোর চেষ্টা সফল হবে কিনা, বা রাষ্ট্রীয় অর্থব্যবস্থার ওপর এর প্রভাব কতটা ভয়াবহ হবে—তা সময়ই বলবে। তবে এখনই যদি সত্য উন্মোচন না হয়, তাহলে দেশের স্বাধীনতা ও আর্থিক নিরাপত্তা ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রজার রহস্যে মুখে কুলুপ খলিলুরের, নাগরিকত্ব বিতর্কে দেশজুড়ে

1

দেশে গৃহযুদ্ধ বাধানোর পাঁয়তারায় ইউনূস গং

2

ইউনূসের প্রতিশ্রুতি ভাঙলেন খলিল; স্ত্রীকে ট্রাস্টি বানিয়ে ই

3

ঢাকায় জাতিসংঘের ছদ্ম মানবাধিকার: সমকামিতার বিষবৃক্ষ ও ইউনুসে

4

ইউনূস সরকার মানবাধিকার রক্ষায় ব্যর্থ : এইচআরডব্লিউ

5

কোটা নয়, প্রতারণা! অযোগ্য এনসিপি নেতার লাখ টাকার চাকরি

6

ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক নিয়ে জাতিকে ঘোল খাওয়াচ্ছেন প্রেস সচিব

7

আমেরিকার পরিকল্পনায় ঢাকায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, বাস্তবায়নে ইস

8

আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচন দেশে সংকট ডেকে আনবে

9

ঢাকা ওয়েস্টিনে মার্কিন সেনা কর্মকর্তার রহস্যজন মৃত্যু, গোপন

10

বিএনপি-জামায়াতের মাধ্যমে ফের বাংলাদেশে জঙ্গি রপ্তানি করছে পা

11

মবের ওপর ভর করে টিকে আছে ইউনূস বাহিনী

12

শেখ হাসিনাকে নিয়ে করা প্রতিবেদনে যেসব বিষয় লুকিয়েছে বিবিসি

13

নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় জানার পর আরও বেপোরোয়া বিএনপি

14

আহত শিক্ষার্থীদের নামে এনসিপির জন্য ফান্ড তুলতে গিয়ে ধরা খেল

15

দুই সমাবেশ স্থলেই মার খেলো এনসিপি, তাহলে গোপালগঞ্জ নিয়ে দ্বি

16

শুল্ক ছাড়ের বিনিময়ে সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়েছে ড. ইউনুস

17

মন্দির অপসারণ না হলে ভেঙে ফেলার হুমকি মুসল্লীদের

18

নেপাল-বাংলাদেশের সহিংস আন্দোলন একই সূত্রে গাঁথা

19

শ্রমবাজারে নতুন সিন্ডিকেট; নিয়ন্ত্রণে ইউনূসের ঘনিষ্ঠ সহচর ল

20