Insight Desk
প্রকাশ : Sep 12, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচন দেশে সংকট ডেকে আনবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন যদি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ছাড়া অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও বৈধতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। নির্বাচনের মূল উদ্দেশ্য হলো গণতান্ত্রিক শাসনের ভিত্তি গঠন করা, দেশের নাগরিকদের তাদের প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া, এবং নির্বাচিত সরকারকে ভোটারের কাছে জবাবদিহি করা।  

তবে দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত বা নিষিদ্ধ করলে নির্বাচনের বৈধতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি হতে পারে। ইন্টারিম সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ২০০৯ সালের অ্যান্টি-টারোরিজম আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ করেছে এবং নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে। এছাড়া আইন ও নির্বাচনী নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে যাতে দলটির নেতা ও কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও অংশ নিতে না পারে।

জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালের সহিংসতার ঘটনায় আওয়ামী লীগের শত শত কর্মী ও সমর্থকের বিরুদ্ধে  ব্যাপকভাবে মামলা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে হাজার হাজার মানুষ কয়েক মাস ধরে জামিন ছাড়া কারাগারে রয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলের প্রতি সমর্থন প্রকাশ বা মিছিল করার জন্যও শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন হলে ভোটারের বিকল্প সীমিত হয়ে যাবে।  আওয়ামী লীগের মতবাদ সমর্থনকারীদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। গত কয়েকটি নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা বাংলাদেশে প্রায় ৩৫–৪০% ভোটের সমর্থন রাখে।

আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন হলে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা হ্রাস পাবে।  আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ হওয়ার ফলে সরকারের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলো ( এনসিপি, বিএনপি,জামায়াত)  অযৌক্তিক সুবিধা পাচ্ছে। সম্প্রতি  ডাকসু নির্বাচন এই অসমতা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে।

আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি হলে সরকারের অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী হিসেবে প্রতীয়মান হবে, যা নির্বাচনের প্রতি আস্থা ক্ষুণ্ণ করছে। এছাড়া প্রধান রাজনৈতিক দলকে বঞ্চিত করে ভোট হলে নির্বাচনের ফলাফল ও সরকারের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এতে ভবিষ্যতে ভোট বর্জন, প্রতিবাদ বা নাগরিক অশান্তি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা আছে।

উল্লেখ্য যে, আওয়ামী লীগকে জোরপূর্বক নির্বাচন প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক, অন্যান্য সরকার ও মানবাধিকার সংস্থা নির্বাচনকে অন্যায় বা অসংগত হিসেবে দেখার সম্ভাবনা রয়েছে, যা কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককেও প্রভাবিত করতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে হলে  আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন, স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও বৈধ। এজন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে নির্ভয়ভাবে প্রচার চালানো, জনমত গড়া ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের পূর্ণ সুযোগ দিতে হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পিনাকির নির্দেশে এনসিপি-জামায়াত-বিএনপিকে নিয়ে বৈঠকে বসছেন ইউ

1

চাইনিজ রাইফেল, এসএমজি ও আড়াই লাখ গুলি নিখোঁজ; আসন্ন নির্বাচন

2

দেশজুড়ে বাড়ছে হত্যা-ধর্ষণ, আতঙ্কিত মানুষ

3

শিক্ষার্থীদের দমাতে হাসনাত-সার্জিসকে দিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রে আসি

4

রায়পুরে বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে রাইফেল উদ্ধার: নাশকতার প্রস্ত

5

পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে হাইজ্যাক করেছে জঙ্গিরা?

6

নারীর নিরাপত্তায় ব্যর্থ রাষ্ট্র: প্রতিদিন ১৪ নারী ধর্ষণের শি

7

জঙ্গি রাষ্ট্রায়নের নেপথ্যে ইউনূস-জিয়া-হাসিনুর ও এনসিপির ভূ

8

কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না বিএনপির চাঁদাবাজি, জনবিস্ফোরণের

9

কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলা, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ বিব্রত

10

গোপনে সেনাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন ওয়েস্টিনে মৃত পাওয়া সেই মা

11

অব্যবস্থাপনায় আলু রপ্তানির প্রণোদনার ৭.৫৪ কোটি টাকা হাওয়া

12

অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগ স্থগিতের খবর সঠিক নয় : জাতীয় বিশ্ববি

13

আন্তর্জাতিক সহায়তা বিতর্কে ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার

14

গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট: ইউনুস সরকারের কূটন

15

ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা

16

কারাগার থেকে এইচএসসি পাস: অদম্য তারুণ্যের প্রতীক সিলেটের আরা

17

আহত শিক্ষার্থীদের নামে এনসিপির জন্য ফান্ড তুলতে গিয়ে ধরা খেল

18

বাংলাদেশের ওপর জঙ্গিবাদের তকমা, গণহারে হচ্ছে ভিসা প্রত্যাখান

19

তবে কি আরেক পিলখানা হত্যাযজ্ঞ দেখতে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

20