Insight Desk
প্রকাশ : Sep 18, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

ট্রাম্পের ইসলামবিরোধী নীতি কার্যকরে দেশে আনাগোনা বেড়েছে মার্কিনি সেনাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি বাংলাদেশে বেড়েছে মার্কিন সেনাদের আনাগোনা। ঢাকা, চট্টগ্রাম সবখানেই তাদের উপস্থিতি বাড়ছে। সেইসঙ্গে দেশে আসছে মার্কিন যুদ্ধবিমানও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইসলামবিরোধী নীতি কার্যকরে মার্কিন সেনারা বাংলাদেশে আসছে।  আর এ মিশনে ইহুদি সেনাদের পাঠানো হচ্ছে। 

গত রোববার যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহিনীর আধুনিক কৌশলগত পরিবহন বিমান সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিস চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এই বিমান সাধারণত জাপানের ইয়োকোটা এয়ারবেস থেকে পরিচালিত হয়। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ওই এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কখনো জরিপের জন্য, কখনো যৌথ মহড়ার জন্য। কয়েক মাস আগে চট্টগ্রামে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে “অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল-২৫” এবং “টাইগার লাইটনিং-২০২৫” নামে দ্বিপক্ষীয় সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।

সূত্রের খবরে জানা গেছে, গত সপ্তাহে একটি ইহুদি মার্কিন সেনা দল চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। এই দলটি লালখান বাজার, হাটহাজারীসহ বিভিন্ন বড় মাদরাসায় হামলার পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এছাড়া, বায়েজিদ বোস্তামী এবং শাহ আমানত (রহ.)-এর মাজারসহ ধর্মীয় স্থানগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এই হামলার মাধ্যমে মাজারপন্থী ও কওমীপন্থীদের মধ্যে বিরোধ উস্কে দেওয়া এবং দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে সূত্র জানাচ্ছে। এরপর বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা চলবে। এই অভিযোগের সাথে যুক্ত আরেকটি গুরুতর পরিকল্পনা হলো মার্কিন দূতাবাসে হামলা। এভাবে দেশকে জঙ্গি আস্ত্রণ হিসেবে চিত্রিত করে আমেরিকান সেনারা এখানে ঘাঁটি গেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

সূত্র অনুসারে, এই ষড়যন্ত্রের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের কিছু অংশ দখল করে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এর সাথে যুক্ত হবে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নেওয়া। এই পরিকল্পনা সফল হলে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক চিত্র মোটামুটি বদলে যাবে। এই গুরুতর অভিযোগ সত্ত্বেও সরকার বা নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো অফিসিয়াল প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সতর্কতার পরিবেশে রয়েছে।

ভুলিয়ে রাখা হয়েছে ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে 

অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ইউনূস সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের (ওএইচসিএইচআর) মিশন চালু নিয়ে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এই সংস্থাটি বাংলাদেশে এখন কাজও শুরু করেছে। ওই দিকে ধর্মভিত্তিক দল জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে সরকার ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে ব্যস্ত রেখেছে। কিন্তু এদিকে বাংলাদেশকে খ্রিস্টান রাজ্য বানানোর কাজ চলছে পুরোদমে। 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ইসলামি দলও সরাসরি ভোটের পরিবর্তে পিআর সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে দলীয় প্রতিনিধি নির্বাচনের পক্ষে। তারা আশা করে, এই ব্যবস্থা তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ প্রশস্ত এমনকি নিশ্চিতও করতে পারে।

সূত্র বলছে, ডাকসু, জাকসুতে জামায়াত জেতানো হয়েছে আমেরিকার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। এই দুই ভোটে জয়ের পর জামায়াত ভাবছে, তারা এখন জাতীয় ক্ষমতাতেও যেতে পারবে। আর এ জন্য তারা অন্যান্য ইসলামী দলগুলোকে নিয়ে পিআরের জন্য আন্দোলনে নামছে।  ওইদিকে বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। তবে এ নিয়ে কারও মাঝে কোনো উচ্চবাচ্য নেই। কিছুদিন আগেও এর বিরোধিতা করেছিল ইসলামী দলগুলো। 

জানা গেছে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের কিছু অংশ নিয়ে “পূর্ব তিমুরের মতো খ্রিস্টান রাষ্ট্র” গঠনের ষড়যন্ত্র চলছে।  এখন জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনের এই সিদ্ধান্ত সেই শঙ্কাকেই আরও জোরালো করছে। কারণে পূর্ব তিমুরেও এই ধরনের অফিস খুলেছিল জাতিসংঘ। 

জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) নামক এই সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে যে কার্যক্রম চালায়, তার মূল লক্ষ্য হলো পশ্চিমা দেশগুলোর সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদকে অন্যান্য রাষ্ট্রের উপর চাপিয়ে দেওয়া। বিশেষ করে, তারা সমকামিতাকে "মানবাধিকার" হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে মরিয়া। বাংলাদেশের মতো একটি রক্ষণশীল মুসলিম প্রধান দেশে এই বিষবাষ্প ছড়ানোর জন্য তারা মোহাম্মদ ইউনুসকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। ইউনূসের নিজের মেয়ে সমকামী—এটি কোনো গোপন তথ্য নয়। ইউনুস নিজেও সমকামিতাকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন। এখন প্রশ্ন হলো, একটি বিদেশি সংস্থাকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এই ধরনের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালানোর অনুমতি দিয়ে আমরা কী আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি?  

ইউনুসের নীলনকশা : বাংলাদেশকে পশ্চিমার সাংস্কৃতিক উপনিবেশ বানানো

ইউনুসের উপদেষ্টা পরিষদ এই চুক্তিকে অনুমোদন দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি পশ্চিমা সাংস্কৃতিক পরীক্ষাগারে পরিণত করার পথ প্রশস্ত করেছে। ওএইচসিএইচআর এখন থেকে বাংলাদেশের আইন, শিক্ষা ব্যবস্থা, এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উপরেও তাদের বিষাক্ত প্রভাব বিস্তার করবে। তারা সমকামিতাকে "প্রগতি" আর "সমতা" হিসেবে প্রচার করবে। স্কুল-কলেজের পাঠ্যবইয়ে LGBTQ+ ইস্যু ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদেও  সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর এলজিটিবি সমর্থক বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোহাম্মদ ইউনুস  যিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে পশ্চিমার কাছে বিক্রি করে দিতে চান। তার মেয়ের সমকামিতাকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করেন। এখন তিনি চান বাংলাদেশের কোটি কোটি তরুণ-তরুণীও এই পথে হাঁটুক। এই মানুষটি কি জাতির বিবেক? না, তিনি জাতির শত্রু। তার নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদ বাংলাদেশের জন্য যা অনুমোদন দিয়েছে, তা হলো—জাতীয় আত্মহননের এক চুক্তি।  

জাতিসংঘের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড : মানবাধিকার নাকি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন?

জাতিসংঘ আজ মানবাধিকারের নামে যা করছে, তা কোনোভাবেই নিরপেক্ষ নয়। তারা মুসলিম দেশগুলোতে সমকামিতার প্রচার করছে, অথচ পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসলামোফোবিয়া বাড়তে দিচ্ছে। ফ্রান্সে হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়, জার্মানিতে মসজিদে হামলা করা হয়—কিন্তু সেখানে জাতিসংঘ নীরব। অথচ বাংলাদেশে তারা "মানবাধিকার" এর নামে সমকামিতার মতো বিকৃতিকে লালন করতে চায়। এটি কোনো মানবাধিকার নয়—এটি সাংস্কৃতিক সন্ত্রাসবাদ।  
 
ধর্মভিত্তিক দলগুলো যদি ক্ষমতার জন্য আমেরিকা ও জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যক্রম চালাতে দেয়, তবে আগামী ১০ বছরের মধ্যে আমরা এমন একটি প্রজন্ম পাব, যারা সমকামিতাকে "স্বাধীনতা" মনে করবে। এছাড়া খ্রিস্টান ধর্মের প্রসারও ব্যাপক ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  ফলে আমাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ধূলিসাৎ হবে। পরিবার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। সমাজে নৈরাজ্য ছড়িয়ে পড়বে।  সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তখন বাংলাদেশও হয়ে উঠবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজার মতো।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জঙ্গিদের বাঁচাতে গোপালগঞ্জে নিরস্ত্র জনতার ওপর সেনাবাহিনীর গ

1

পাকিস্তানকে ৭১-এর গণহত্যার দায় মুক্তি দিতে ইউসূসের যত আয়োজ

2

সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করতে ইউনূস গংদের নিলনকশা: মুক্তি দেওয়া হচ

3

নেপাল-বাংলাদেশের সহিংস আন্দোলন একই সূত্রে গাঁথা

4

গভীর রাতে ঢাবিতে মঞ্চ নাটক, প্রশাসনের দুর্বলতায় সংকটকে ছাত্র

5

গোপালগঞ্জে বিচারবহির্ভূত হত্যা চালাল সেনাবাহিনী, নিহত ৭

6

সিলেটে প্রকাশ্যেই পাথর লুট করছে বিএনপি নেতারা, প্রশাসনের নীর

7

লুকিয়ে আমেরিকার সঙ্গে ইউনূসের চুক্তি, হুমকিতে বাংলাদেশের সা

8

অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগ স্থগিতের খবর সঠিক নয় : জাতীয় বিশ্ববি

9

জঙ্গি রাষ্ট্রায়নের নেপথ্যে ইউনূস-জিয়া-হাসিনুর ও এনসিপির ভূ

10

নারীর নিরাপত্তায় ব্যর্থ রাষ্ট্র: প্রতিদিন ১৪ নারী ধর্ষণের শি

11

মব ভায়োলেন্সে প্যারালাইজড বাংলাদেশের গণমাধ্যম

12

বাংলাদেশে সহিংসতার মাধ্যমে সরকার পতনে সহায়তা করে জাতিসংঘ!

13

ভোট না দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন ইউনূস, নতুন অস্ত্র পিআর পদ্ধতিত

14

ইউনূস-লামিয়া মোর্শেদ সিন্ডিকেটে ধ্বংসের মুখে দেশের শ্রম বাজা

15

বাংলাদেশ-পাকিস্তান এক করার মিশন নিয়ে ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ

16

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে ইউনূসপন্থীদের, নি

17

শি, মোদি, পুতিনের ঐক্যের বার্তা, ইউনূসের কপালে চিন্তার ভাঁজ

18

১৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তির চিন্তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

19

জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে একের পর এক মিথ্যাচার করলেন ইউনূস

20