নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক বাজার রক্ষার নামে ইউনূস সরকারের সিদ্ধান্তে খাদ্য ব্যয় বেড়েছে, যেখানে পূর্ববর্তী প্রশাসনের অদক্ষতা ও অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রও প্রভাব ফেলেছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় প্রতি টন ৭৫–৮০ ডলার বেশি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি করছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন গমের দাম প্রতি টন ৩০৮ ডলার, যেখানে রাশিয়ার গম বিক্রি হচ্ছে ২২৬–২৩৫ ডলারে। যদিও কম দামের গম সহজলভ্য, সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বাণিজ্য চুক্তি বজায় রাখাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে খাদ্য আমদানিতে অতিরিক্ত ব্যয় এবং সিদ্ধান্তগ্রহণে পূর্ববর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের অদক্ষতা ও ড. মোহাম্মদ ইউনূসের ব্যর্থতা দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সরকারের যুক্তি হলো, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেছেন, “এই বাজার রক্ষা করাটাই সরকারের মূল লক্ষ্য, যা বছরের শেষে ১০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।” তবে সমালোচকরা মনে করছেন, রপ্তানি বাজার রক্ষার নামে অতিমূল্যে গম কেনা দেশের অর্থনীতির জন্য অদূরদর্শী পদক্ষেপ।
সরকার মার্কিন গমের প্রোটিন ও মান রাশিয়ার চেয়ে ভালো বলে দাবি করছে। এছাড়া রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি ও সরবরাহ ঝুঁকি উল্লেখ করে কম দামের গম এড়িয়ে যাচ্ছে। তবে অনেক বেসরকারি আমদানিকারক রাশিয়ান গম কম দামে আনলেও সরকার চুক্তির কারণে যুক্তরাষ্ট্রকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
মেঘনা গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসলিম শাহরিয়ার জানান, “আমরা দাম ও মান দুই-ই বিবেচনা করি। যুক্তরাষ্ট্রের গম ভালো হলেও রাশিয়ার দাম অনেক কম।” অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকারের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক চুক্তির ওপর বেশি নির্ভরশীল। এতে দেশের খাদ্য আমদানিতে অপ্রয়োজনে ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সুযোগ সীমিত হচ্ছে।
সরকার ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৩৫ লাখ টন গম আমদানের চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে এই নীতি রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে পূর্ববর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের অদক্ষতা এবং অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র বিষয়ক সমস্যা এই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে, যা জাতীয় খাদ্য ও বাণিজ্য নীতির দুর্বলতা স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।
মন্তব্য করুন