বিশেষ প্রতিবেদন
দেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা নতুন করে তীব্র আকার ধারণ করেছে। সরকার reportedly ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট–টু’ নামে একটি অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার লক্ষ্য মূলত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও তার নেতাকর্মীদের কার্যক্রম সীমিত রাখা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক গোপন বৈঠকে পুলিশের মহাপরিদর্শক ও স্বরাষ্ট্র সচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে আসন্ন গণভোট ঠেকাতে বিএনপির আন্দোলন দমন এবং রাজনৈতিক চাপ নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়
সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হবে। যৌথবাহিনী এই অভিযানের নেতৃত্বে থাকবে, এবং সেনা কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে মাঠপর্যায়ে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিএনপি বলছে, সরকারের উদ্দেশ্য নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের সংগঠনিক শক্তি ভেঙে দেওয়া।
সম্প্রতি সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলনকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়। অন্যদিকে চট্টগ্রামের রাউজান থেকে একটি বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে—যা রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তুলেছে।
স্বাধীন পর্যবেক্ষক সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করে বলছে, নির্বাচনপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক না হলে ভোট ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হবে। European Union Election Expert Mission এবং Kofi Annan Foundation এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশের ভোট প্রক্রিয়া এখনও “মধ্যম থেকে নিম্ন” মানদণ্ডে রয়েছে, যেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও ভোটার নিরাপত্তা বড় চ্যালেঞ্জ।
এদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে। দলটি দীর্ঘদিন ধরে ‘শাপলা ফুল’ প্রতীক পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে, কিন্তু নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে এই প্রতীক নেই। এনসিপি বলছে, কমিশনের এই সিদ্ধান্তে তাদের নির্বাচন প্রস্তুতি বিলম্বিত হচ্ছে। ফলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের সময়সূচি নিয়েও নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।” দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “বিএনপি বিবাহে রাজি হয়েছে, কাবিননামায় সাইনও করেছে, এখন আর না বলার অপশন নেই। বিএনপির জন্ম হয়েছিল ‘হ্যাঁ’ ভোটের মাধ্যমে, মৃত্যু হবে ‘না’ ভোটের মাধ্যমে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই কঠিন অবস্থানে রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ন্ত্রণে আনা, আর বিএনপি চেষ্টা করছে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সক্রিয় উপস্থিতি ধরে রাখার।
মন্তব্য করুন