নিজস্ব প্রতিবেদক
পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সহিংসতা, সংঘাত ও বিভাজনের নেপথ্যে জামায়াত-শিবিরের চক্র এবং বিদেশি প্ররোচনার বিষয়টি দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এর ফলে দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সামাজিক সংহতি প্রশ্নের মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পাহাড়ি-বাঙালি ও আদিবাসীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির মাধ্যমে এলাকায় আতঙ্ক ও অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় সরাসরি অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসছে জামায়াত-শিবিরের মতো মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলো। তারা নেপথ্যে থেকে আরাকান আর্মি ও অন্যান্য বাহিনীকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উসকে দিচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা এবং জনগণের আস্থা দুর্বল করে বিচ্ছিন্নতার পথে সুবিধা আদায়।
এছাড়া, বিদেশি অর্থায়ন ও প্রভাবের ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে—বাহ্যিক সহায়তায় কিছু চক্র অপপ্রচার ছড়িয়ে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ভাঙার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট শক্তিগুলোকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গণধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে, জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা এতে জড়িত। অথচ অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি না করে উল্টো সেনাবাহিনীকে দায়ী করার অপপ্রচারে মাঠ গরম করা হচ্ছে। এতে প্রকৃত অপরাধ আড়াল হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।
আরাকান আর্মির সক্রিয় ভূমিকা, অপরাধীদের পক্ষে অবস্থান এবং জনসমক্ষে তাদের সমর্থন—সবকিছুই এলাকার অশান্তি আরও বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো নিছক বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ, যার লক্ষ্য জাতীয় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ভেঙে দেওয়া।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্বও বহুগুণ বেড়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা, অপপ্রচার ও বিভাজনমূলক কর্মকাণ্ড রোধ করা এবং পাহাড়ি-বাঙালি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আন্তরিক সংলাপ চালানো এখন সময়ের দাবি।
পাহাড়ের অশান্তি কেবল ওই অঞ্চলের সমস্যা নয়—এটি সমগ্র বাংলাদেশকে প্রভাবিত করে। তাই যারা দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্যকে ভেঙে দিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা রেখে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করাই পারে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে।
মন্তব্য করুন