নিজস্ব প্রতিবেদক
অস্ট্রেলিয়ার প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম The Australia Today এ প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী ও প্রভাবশালী নেতা শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি বিশ্লেষণধর্মী সম্পাদকীয়, শিরোনাম “Autocrat or Architect” (স্বৈরাচার না স্থপতি)।
লেখাটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে স্থিতিশীল ও অভিজ্ঞ নেতা শেখ হাসিনা আজ নতুন করে বৈশ্বিক মূল্যায়নের কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। সমালোচকদের কাছে তিনি “কঠোর শাসক”, কিন্তু কোটি মানুষের কাছে তিনি স্থিতিশীলতার স্থপতি এমন এক নারী, যিনি অস্থির ও বিশৃঙ্খল দেশকে নিয়ন্ত্রণে এনে উন্নয়ন, সক্ষমতা ও আত্মনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিয়েছেন।
পদ্মা সেতু, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং গ্রামীণ অর্থনীতির পুনর্জাগরণের মতো সাফল্যকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের মাইলফলক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। তার পররাষ্ট্রনীতি “সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়” বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ভারসাম্যের এক অনন্য মডেলে পরিণত করেছে, যেখানে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মতো পরাশক্তির সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে দক্ষ কূটনীতির মাধ্যমে।
২০২৪ সালের তথাকথিত ছাত্র আন্দোলন সহ সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটেও শেখ হাসিনার অবস্থান ছিল সংযত ও আইনভিত্তিক। তিনি ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সমাধান খুঁজেছেন আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যেই। তবু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের একাংশ তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছে, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রমাণবিহীন ও পক্ষপাতমূলক বলে উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে, তদন্ত, বিচার ও নতুন সরকারের নীরবতা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, যার উত্তর আজও অজানা।
লেখায় আরও বলা হয়েছে, আইন ও বিচার ব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ঘটনায় পশ্চিমা বিশ্বের নীরবতা বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। অথচ প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক বৃহৎ অংশ এখনো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থাশীল ও সমর্থনশীল।
সম্পাদকীয়টির শেষাংশে লেখা হয়েছে:
“শেখ হাসিনার কঠোর সিদ্ধান্তগুলো ছিল জাতির বৃহত্তর স্বার্থে, কখনো ব্যক্তিগত ক্ষমতার লোভে নয়। পশ্চিমা মিডিয়া প্রায়ই সেই বাস্তব সত্যকে আড়াল করে নিজেদের শিরোনামে বিকৃত করেছে। কিন্তু ইতিহাসের আদালতে শেখ হাসিনা কেবল একজন নেত্রী নন তিনি সেই জাতির স্থপতি, যিনি উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও সার্বভৌম মর্যাদার স্বপ্নে একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করেছেন।”
শেখ হাসিনার অধ্যায় তাই কেবল একটি রাজনৈতিক কাহিনি নয়, এটি এক জাতির আত্মমর্যাদা, নেতৃত্ব ও অগ্রযাত্রার জীবন্ত ইতিহাস। তিনি সাদ্দাম বা গাদ্দাফির মতো কেউ নন; তিনি তার নিজস্ব স্বকীয়তায় এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, যিনি বাংলাদেশের আধুনিক রূপান্তরের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
মন্তব্য করুন