রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে পরিচিত সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর থেকে এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। ফার্মগেটে সংঘর্ষ চলাকালে এক পুলিশ সদস্যকে বেধড়ক মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, দুপুর ১টা ২৫ মিনিটের দিকে সংসদ ভবনের প্রধান ফটকে ঢোকার চেষ্টা করে জুলাই সমর্থকদের একটি অংশ। তারা গেট ভেঙে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ ও এবিপিএন সদস্যরা বাধা দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধরা পাল্টা আক্রমণ চালায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুরুতে পুলিশ আলোচনার চেষ্টা করলেও বিক্ষোভকারীরা পিছু হটেনি। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে এবং সংসদ ভবনের আশপাশে রাস্তায় বিক্ষোভে নামে। খেজুরবাগান ও এমপি হোস্টেল এলাকার কয়েকটি স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।
সংঘর্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ফার্মগেট, জিয়া উদ্যান ও ধানমন্ডি এলাকায়। উভয় পক্ষকে ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। ফার্মগেটে ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি মিলে এক পুলিশ সদস্যকে মারধর করছে। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
পুলিশের দাবি, জুলাই সমর্থকরা সাংগঠনিকভাবে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। তারা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে সরকারি সম্পদে আগুন দেয় এবং এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
অন্যদিকে জুলাই সমর্থকদের অভিযোগ, তারা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলেন; কিন্তু পুলিশ বিনা উসকানিতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। তাদের দাবি, সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানান, “পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সংসদ ভবনের সামনে এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও আশপাশের কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষ চলছে। আমাদের সিনিয়র কর্মকর্তারা মাঠে আছেন, অভিযানও অব্যাহত আছে।”
দুপুর ৩টার পরও সংসদ ভবন এলাকার আশপাশে উত্তেজনা বিরাজ করে। বিক্ষুব্ধরা ছত্রভঙ্গ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয় বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন