নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নেমে এসেছে ভয়াবহ অন্ধকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটাই ইউনুস সরকারের “নতুন বাংলাদেশ” যেখানে স্বাধীনতার পক্ষের মানুষই আজ রাষ্ট্রের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় কারাগার পূর্ণ ক্ষমতায় পরিচালিত হচ্ছে। নতুন করে আটক হওয়া নেতাকর্মীদের রাখার জায়গা না থাকায় রাজধানী ও বিভিন্ন জেলায় সামরিক ক্যান্টনমেন্টের কিছু ভবনকে কারাগার হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়েছে।
রাজধানীর এক মানবাধিকার সংগঠনের কর্মকর্তা বলেন, “এই দৃশ্য স্বাধীনতার পর আর কখনো দেখা যায়নি। রাজনৈতিক ভিন্নমতের মানুষদের জন্য এখন জেলখানা কম পড়ে গেছে এটা কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চিত্র হতে পারে না।” একসময় যে ক্যান্টনমেন্ট ছিল নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার প্রতীক, আজ সেটি পরিণত হয়েছে ভয় ও নিপীড়নের নতুন কারাগারে।
অভিযোগ প্রমাণ ছাড়াই বন্দী করা হচ্ছে নিরপরাধদের:
অনেক গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগই নেই। কেউ কেবল আওয়ামী লীগের অফিসে উপস্থিত থাকার কারণে, কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করায় আটক হয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি একটি “চিন্তাশক্তি দমন” নীতি যেখানে মানুষকে ভয় দেখিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
একজন সিনিয়র আইনজীবীর মন্তব্য,
“আইনের চোখে প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার সমান, কিন্তু ইউনুস সরকারের হাতে সেই ন্যায্যতা এখন বিলীন। অভিযোগ প্রমাণের আগেই মানুষকে বন্দী করা হচ্ছে, এটা স্পষ্টতই বিচারবহির্ভূত দমন।”
‘নতুন বাংলাদেশ’ নয়, নতুন দুঃস্বপ্ন:
ইউনুস সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে গণগ্রেপ্তার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করা ও গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ বেড়েই চলেছে। বিচার, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের মূল্যবোধ আজ বন্দী হয়ে আছে সেই তথাকথিত “নতুন বাংলাদেশ”-এর ভেতরে, যার প্রতিশ্রুতি ছিল ন্যায় ও স্বাধীনতার, কিন্তু বাস্তবতা দাঁড়িয়েছে উল্টো।
একজন তরুণ আওয়ামী লীগ কর্মীর পরিবারের সদস্য বলেন, “আমার ভাইয়ের কোনো অপরাধ নেই। শুধু বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করায় আজ সে কারাগারে। আমরা ন্যায় চাই, প্রতিশোধ নয়।”
নৈতিক দেউলিয়াত্বের চরম প্রকাশ:
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, এই দমন পীড়ন কেবল রাজনৈতিক প্রতিশোধ নয়, বরং সরকারের নৈতিক দেউলিয়াত্বের নগ্ন প্রকাশ। যেখানে বিরোধিতার মানে “অপরাধ” হয়ে দাঁড়ায়, সেখানে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব থাকে না।
এখন প্রশ্ন একটাই যে দেশ রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছিল, সেই দেশ কি আবার নিপীড়নের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে চলেছে?
মন্তব্য করুন