নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে গুরুতর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদ হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত সালাহউদ্দিন আম্মার নির্বাচিত হয়েছেন সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে।
২০২৪ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর রাতে রাজশাহী নগরের বিনোদপুর বাজার এলাকায় সংঘটিত সেই হত্যাকাণ্ডে পিটিয়ে হত্যা করা হয় মাসুদকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলায় অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রভাবশালী ছাত্রগোষ্ঠী। ঘটনার পর মাসুদের স্ত্রী বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় মামলা দায়ের করলেও প্রশাসনিক চাপে কারও নাম প্রকাশ করতে পারেননি তিনি।
পরবর্তীতে পুলিশের ছায়া তদন্তে সালাহউদ্দিন আম্মারকে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, কিন্তু জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ইউনূস সরকারের সময় মামলাটির কোনো অগ্রগতি হয়নি। হত্যাকাণ্ডের এক বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার প্রক্রিয়া স্থবির, আর মামলার আসামিরা আজ অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে ক্যাম্পাস ও রাজশাহীর রাজনীতিতে।
এমন প্রেক্ষাপটে আম্মারের নির্বাচিত হওয়া শিক্ষাঙ্গন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ বলছেন, “যেখানে খুনের মামলার প্রধান আসামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন, সেটিই বিচারহীনতার সবচেয়ে ভয়াবহ উদাহরণ।”
রাকসু নির্বাচনে সালাহউদ্দিন আম্মার ১১ হাজার ১১৮ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমার ম্যান্ডেট শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেটের বাইরে আমি এক মুহূর্ত থাকব না, ইনশাআল্লাহ
নিহত মাসুদ ২০২২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে স্টোর অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তার আগে ২০১৪ সালে ক্যাম্পাসে হামলায় এক পা হারান তিনি। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে তিনি কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, একটি হত্যা মামলার প্রধান আসামির বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে জয়ী হওয়া কেবল বিচারহীনতারই নয়, বরং শিক্ষাঙ্গনে নৈতিক অবক্ষয়েরও নির্মম প্রতিচ্ছবি।
মন্তব্য করুন