Insight Desk
প্রকাশ : Sep 4, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে ফের আলোচনায় স্বাধীনতাবিরোধী পিনাকী

নিজস্ব প্রতিবেকদ

প্রবাসী বাংলাদেশি ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে। তার ফেসবুক পেজে নারীদের শারীরিক অঙ্গ নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট ও মন্তব্য করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।

এই ঘটনায় আমজনতার দলের সদস্য সচিব মো. তারেক রহমান পিনাকীকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে ওইসব মন্তব্য মুছে ফেলতে বলেছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা না হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এর আগেও পিনাকী ভট্টাচার্য নারীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন। 

তিনি আরও মন্তব্য করেন, পিনাকীর এই আচরণ তার পরিবারের জন্যও লজ্জাজনক। তিনি পিনাকীর মায়ের কাছে সহযোগিতা চেয়ে বলেন, “শ্যামল ভট্টাচার্য স্যার বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই এসব বন্ধ করাতাম। তিনি তুলনা টেনে বলেন, “হিরো আলম মূর্খ বা অশিক্ষিত হতে পারেন, কিন্তু তিনি কখনো নারীদের নিয়ে এমন অশ্লীল মন্তব্য করেননি।”

পিনাকী ভট্টাচার্য বর্তমানে ফ্রান্সে বসবাস করছেন। পেশায় তিনি চিকিৎসক ও ব্যবসায়ী, পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার প্রায় ২৩ লাখ ফলোয়ার রয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতি ও সামাজিক ইস্যুতে প্রায়ই তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে থাকেন। তবে সাম্প্রতিক মন্তব্য তাকে নতুন করে বিতর্কে ফেলেছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পিনাকী ভট্টাচার্য নিজেই কিছু মন্তব্যের জন্য দায় স্বীকার করেছেন। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাননি। এর আগেও ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় আত্মগোপনে যাওয়া এবং ২০২২ সালে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হওয়ার কারণে আলোচনায় ছিলেন তিনি। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই মনে করছেন, পিনাকীর শুধু ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং নারীদের প্রতি সামগ্রিকভাবে অবমাননাকর।

পিনাকী ভট্টাচার্যের বক্তব্য দেখে মনে হয় তিনি মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করার মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকে ন্যায্য প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। তিনি এবং কিছু গোষ্ঠী ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ছোট করে দেখানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি ১৯৭১-এর গণমানুষের সংগ্রামকে হ্রাস করে দেখাতে চায় এবং ইতিহাসকে পুনর্লিখন করে জনগণের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দেয়। 
 
২০০৮ সালে বাংলাদেশের পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড নকল ওষুধ সরবরাহ করে, যার ফলে কালাজ্বর রোগীসহ ২৮৯ জনের মৃত্যু হয়। তৎকালীন চিফ অপারেটিং অফিসার পিনাকী ভট্টাচার্যএর তত্ত্বাবধানে উৎপাদিত মিল্টেফস ওষুধে কার্যকরী উপাদান ছিল না। 

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও WHO নিশ্চিত করে ওষুধ নকল ছিল। সরকারি তদন্তে উল্লেখ করা হয়, পিনাকী ও সহযোগীরা জ্ঞাতসারে বাজারজাত করেছিলেন, যা গুরুতর অপরাধ। যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং ফ্রান্সে বসবাস করছেন, বিচার এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এই কেলেঙ্কারি বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের দুর্বলতা উদঘাটন করেছে এবং জনগণ ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছে।

পিনাকীর জন্ম যেভাবে 

ভট্টাচার্য’ পদবি হলেও পিনাকি আদপে একজন পাকিস্তানি রাজাকারের ‘জারজ সন্তান’ এবং ধর্ষণে জন্ম তার। আর এই সত্য প্রকাশ্যে আনেন আমানউল্লাহ খান নামে শ্যামল ভট্টাচার্যর একজন বন্ধু । তার সেই স্বীকারোক্তি ১৪১৯ বঙ্গাব্দের ২৮ শে শ্রাবণ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয় বাংলাদেশের সংবাদপত্র দৈনিক ইত্তেফাক-এ । প্রতিবেদনটির কিছু অংশ নিচে তুলে ধরা হল:

পিনাকীর বাবা ছিলেন শ্যামল ভট্টাচার্য। তিনি পাকিস্তানি এসডিইও সোয়েবের অনুরোধে সরকারি চাকরি ছেড়ে শিক্ষণ প্রশিক্ষণ কোর্স করতে ১৯৬৬ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় চলে যান ৬ মাসের প্রশিক্ষণে। জুন মাসে সুক্রিতি বৌদির চিঠি মারফত জানতে পারেন শ্যামল দা বাবা হতে যাচ্ছেন। বৌদির চিঠি পেয়ে আনন্দের আর সীমা ধরে না শ্যামল দার, বগুড়া ফিরে আসার জন্য উনি উতলা হয়ে উঠেন। 

প্রিন্সিপাল এর কাছ থেকে ছুটির প্রার্থনা করেও ছুটি জুটলো না, সুক্রিতি বৌদিকে চিঠিতে জানালেন সেই কষ্টের কথা। প্রশিক্ষণ শেষে বগুড়া ফিরলেন আগষ্ট মাসে। ফেরার পরপরই শ্যামল দাকে এসডিইও সাহেব বগুড়া জেলা স্কুলের শিক্ষক হিসাবে জয়েন করার কথা বলেন। শ্যামল দা সুক্রিতি বৌদির শুশ্রূষার কথা চিন্তা করে সেই সময় যোগদান করেন নি, সন্তান জন্মগ্রহণ করার পর যোগদান করবেন বলে এসডিইও সাহেবকে জানান।

এদিকে ১৯৬৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এসডিইও সাহেব কিশোরগঞ্জে বদলি হয়ে যাচ্ছেন জেনে অগত্যা জানুয়ারী মাসে সন্তান জন্মগ্রহণ না করা সত্যেও শিক্ষকতার চাকুরীতে যোগদান করেন ১৯৬৭ সালের ১৬ জানুয়ারি। ডিসেম্বর – জানুয়ারিতেও সুক্রিতি বৌদির সন্তান জন্মগ্রহণ না করাতে শ্যামল দার সন্ধেহের তীর বাকে। 

কথায় চাল চলনে তা আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম। বুঝলেও না বুঝার ভাব ধরে থাকতাম। জানুয়ারি মাস থেকেই তার ব্যক্তি জীবনের অশান্তির শুরু। সন্দেহের দানা বড় হতে থাকে ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে, সুক্রিতি বৌদির সাথে প্রতিদিনই ঝগড়া ঝাটি হতো তখন। বৌদিকে পাঠিয়ে দেন বৌদির বাপের বাড়ি। ১৯৬৭ সালের মার্চের প্রথম দিনে সুক্রিতি বৌদির প্রথম পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করে। রাগে ক্ষোভে প্রথম সন্তানের মুখ পর্যন্ত দেখতে যাননি শান্ত সরল শ্যামল দা। পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে লোকলজ্জার ভয়ে ৩ মাস পরে, সুক্রিতি বৌদিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।


মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভয় দেখিয়ে ৫ আগস্ট ‘গণজোয়ার’ সৃষ্টির অপচেষ্টা

1

আওয়ামী লীগের আহ্বান: ইউএনডিপি নির্বাচন সহায়তা স্থগিত করুক

2

মন্দির অপসারণ না হলে ভেঙে ফেলার হুমকি মুসল্লীদের

3

নেত্রকোনায় থানার পাশেই মুদি ব্যবসায়ীকে গলাকেটে হত্যা

4

দুদক ধ্বংসে মরিয়া ইউনূস গং

5

ঢাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তিন ব্রিগেডিয়ার, গন্তব্য আরাকান

6

আসছে বন্যা, হাসছে ইউনূস-এনসিপি, আবারও কি হবে প্রতারণা?

7

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি অস্ত্রের জোগান আসছে কোথা থেকে ও কিভ

8

ইউনূসের কাছ থেকে মোটা অংকের কমিশন নিয়েছেন তারেক, গ্যাঁড়াকলে

9

অপকর্ম আড়ালেই ভরসা “গুজব যন্ত্রে”: সক্রিয় ইউনূস গোষ্ঠী

10

ফ্রান্সে অবস্থানরত ডা. পিনাকী ভট্টাচার্যের অনলাইন কার্যক্রমে

11

বিপদে পড়লেই আওয়ামী লীগের কথা মনে পড়ে ইউনূসের

12

মৌসুমী, ফারিয়া ও সাবিলা নূরসহ ২৫ জনের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ

13

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেকের সম্মতিতে চালানো হয়েছে নৃশংসত

14

ইউনূস সরকারের ব্যর্থতা: সারাদেশে খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, নদীতে

15

৫ আগস্টের পর বিএনপির দখলকাণ্ডে দিশেহারা জনগণ

16

গভীর রাতে ঢাবিতে মঞ্চ নাটক, প্রশাসনের দুর্বলতায় সংকটকে ছাত্র

17

ইউনূসের মালয়েশিয়া সফরকে ঘিরে প্রবাসীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ

18

বৈষম্যবিরোধীরাই দেখাল, আন্দোলনে রোহিঙ্গা ও বিহারীদের ভূমিকা

19

যোগ্যতায় রিটেন পাস করতে হবে, ভাইভায় ইনশাআল্লাহ সাহায্য করবো’

20