Insight Desk
প্রকাশ : Oct 11, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

‘ওড়না কোথায়’ বলে তরুণীকে হেনস্তা, অভিযুক্ত এনসিপি নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘ওড়না কোথায়?’—এই প্রশ্ন তুলে এক তরুণীকে প্রকাশ্যে হেনস্তা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় এক নেতা ও তার অনুসারীরা। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া প্রায় ৩৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন তরুণ মিলে এক তরুণীকে ঘিরে রেখেছে। তারা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে তরুণীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ‘ওড়না’ প্রসঙ্গে নানা প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে। এ সময় একাধিক ব্যক্তি আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গিও করে এবং তরুণীর ধর্ম পরিচয় নিয়েও অবমাননাকর মন্তব্য তোলে।

ভিডিওতে অভিযুক্ত ও ঘটনাস্থল সম্পর্কে বিস্তারিত জানা না গেলেও, স্থানীয় সূত্র ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি উঠেছে যে, ঘটনার সঙ্গে এনসিপির এক প্রভাবশালী স্থানীয় নেতার সম্পৃক্ততা রয়েছে। ওই নেতা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ধর্মীয় উগ্র বক্তব্য ও নারী বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালিয়ে আসছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, নারী পোশাক নিয়ে প্রকাশ্যে কাউকে হেনস্তা করা কেবল মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং এটি সমাজে উগ্রবাদ ও নারীবিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “ওড়না কোথায় বলে যে ছেলেটি একজন নারীকে হ্যারাস করল, তাকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা উচিত। নইলে অন্য উগ্র চিন্তাধারার লোকজনও এতে উৎসাহিত হবে।” তিনি আরও বলেন, “‘ওড়না কোথায়’ বা ‘হিজাব কোথায়’ ধরনের উগ্রতা আমাদের সমাজে জায়গা পেতে পারে না। ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোরও এসব বিষয় নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।”

অ্যাক্টিভিস্ট সাদিক মাহবুব ইসলাম এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে লিখেছেন, “এক নারী বুকে ওড়না না দেওয়ায় তাকে মব করে হেনস্তা করা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনাগুলো বাংলাদেশের ধর্মীয় আবেগকে পুঁজি করে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্যকে বৈধতা দিচ্ছে। ইন্টারিম সরকারের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে একটি গোষ্ঠী পার পেয়ে যাচ্ছে।”

সামাজিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ঘটনা শুধু একজন নারীর উপর আক্রমণ নয়, বরং এটি বাংলাদেশের নারী স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও সহনশীলতার ওপর সরাসরি আঘাত। তারা বলেন, এনসিপির মতো রাজনৈতিক দলের নেতাদের পক্ষ থেকে এই ধরনের আচরণ প্রমাণ করে—নারী নিরাপত্তার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো গভীর বৈষম্যমূলক মানসিকতা কাজ করছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি নারীর পোশাক বা ধর্মীয় বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে হয়রানি বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে তারা।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনই প্রমাণ করবে তিনি স্বৈরাচার ছিলেন ন

1

গোপালগঞ্জের এনসিপি সমাবেশে বহিষ্কৃত এএসআই রঞ্জু, ছিলেন ফায়ার

2

সংসদ ভবন ঘিরে উত্তেজনা: জুলাই সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

3

বৈষম্যবিরোধী ও এনসিপির চাঁদার টাকা যাচ্ছে কোথায়, ভাগ পায় কার

4

চাঁদাবাজি আমি করতে দিছি’ বিএনপি নেতার স্বীকারোক্তিতে ক্ষোভে

5

মব সন্ত্রাসে কমেছে বিদেশি বিনিয়োগ, অর্থনীতিকে পঙ্গু করার ষড়য

6

বাংলাদেশ-পাকিস্তান এক করার মিশন নিয়ে ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ

7

মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম — এই কথাটাই আজ নিষিদ্ধ করতে চাচ্ছে যারা

8

ইউনূসের প্রতিশ্রুতি ভাঙলেন খলিল; স্ত্রীকে ট্রাস্টি বানিয়ে ই

9

দেশজুড়ে বাড়ছে হত্যা-ধর্ষণ, আতঙ্কিত মানুষ

10

বদলির আদেশ বাতিল ও এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণে লাগাতার কর্মস

11

জুলাই: বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের পুনরুত্থানের মাস

12

ইউনূসের ছত্রছায়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী কিশোরগ্যাংয়ের দেশ

13

ভিত্তিহীন অভিযোগে হয়রানি: ইউনূস ও দুদকের বিরুদ্ধে টিউলিপের

14

তিন বাহিনীকে নিয়ে জাতির সঙ্গে ইউনুসের প্রেস উইংয়ের মিথ্যাচ

15

শ্রমবাজারে নতুন সিন্ডিকেট; নিয়ন্ত্রণে ইউনূসের ঘনিষ্ঠ সহচর ল

16

চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট আবার সাধারণ রোগীদেরও হবে কবে?

17

শাহজালাল বিমানবন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: ইউনুস সরকারের নীরব সম

18

২০২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই অকৃতকার্য: ভেঙে পড়ছে দেশের শিক্ষ

19

পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে হাইজ্যাক করেছে জঙ্গিরা?

20