নিজস্ব প্রতিবেদক
অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ইউনূস সরকারের সাথে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের (OHCHR) মিশন চালু নিয়ে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে বলে সরকার নিজেই জানিয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় (Country Office) স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় চুক্তিসমূহ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
তবে এই ঘোষণা ঘিরে জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, একটি অনির্বাচিত, অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক সরকার কীভাবে জাতির মতামত ছাড়াই আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে এত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি করতে পারে? এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
জাতিসংঘ অফিস মানেই কি উন্নতি?
বর্তমানে যেসব দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় রয়েছে—তার বেশিরভাগই যুদ্ধবিধ্বস্ত, গৃহযুদ্ধের কবলে বা মানবাধিকার পরিস্থিতিতে ব্যর্থ রাষ্ট্র। আফগানিস্তান, সুদান, কঙ্গো, দক্ষিণ সুদান, মিয়ানমারসহ মোট ১৯টি দেশে এমন কার্যালয় রয়েছে, কিন্তু কোনটিতেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বরং বলা যায়, অনেক দেশে জাতিসংঘ অফিস স্থাপনের পরই সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে।
বাংলাদেশে এই কার্যালয়ের উদ্দেশ্য কী?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই কার্যালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদেশি হস্তক্ষেপের পথ সুগম হবে। অনেকের মতে, এটি "বাংলাদেশকে আমেরিকার তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার কৌশলগত পদক্ষেপ", যার মূল পরিকল্পনায় রয়েছেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাকে জাতিসংঘ মহাসচিব বানানোর প্রচেষ্টা এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক কৌশল বাস্তবায়নের আশঙ্কা নিয়েও আলোচনা চলছে।
প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা মনে করিয়ে দিচ্ছেন অনেকে
২০২৪ সালের ২৩ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সতর্ক করে বলেছিলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের কিছু অংশ নিয়ে “পূর্ব তিমুরের মতো খ্রিস্টান রাষ্ট্র” গঠনের ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি এয়ার বেজ স্থাপনেরও প্রস্তাব এসেছে। এখন জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনের এই সিদ্ধান্ত সেই শঙ্কাকেই আরও জোরালো করছে।
জনগণের প্রশ্ন: কার স্বার্থে এই চুক্তি?
যখন জাতিসংঘ নিজেই আর্থিক সংকটে রয়েছে, তখন বাংলাদেশে নতুন অফিস খোলার তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক? কেন সরকার চুক্তির বিস্তারিত তথ্য গোপন রাখছে? পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যে “নিজস্ব স্বার্থে” চুক্তির কথা বলেছেন—তা কি ইউনূস সরকারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে, না কি দেশকে এক নতুন সংকটের মুখে ঠেলে দেওয়ার প্রক্রিয়ার অংশ?
বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্থিতিশীলতা ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তারা সতর্ক করছেন, একটি অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ অসম্ভব। একইসঙ্গে, জনগণকে সচেতন হয়ে “অদৃশ্য চুক্তি ও বিদেশি প্রভাব” মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
মন্তব্য করুন