নিজস্ব প্রতিবেদক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতা, মব সহিংসতা ও অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে দেশের সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের হিথ্রো, বেলজিয়ামের ব্রাসেলস ও জার্মানির বার্লিনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাইবার হামলার ঘটনার পর বাংলাদেশেও এ ধরনের হুমকির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বেবিচকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বব্যাপী সাইবার হামলার পাশাপাশি দেশে সাম্প্রতিক সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিশেষ করে বিমানবন্দরগুলো এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বেবিচক সব বিমানবন্দরের প্রধান ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ১০ দফা বিশেষ নির্দেশনা পাঠিয়েছে।
বেবিচকের সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মেহবুব খানের স্বাক্ষরে জারি করা নির্দেশনায় সাইবার নিরাপত্তা জোরদার, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার, সন্দেহজনক ই-মেইল বা লিংকে ক্লিক না করা, নিয়মিত সফটওয়্যার ও অ্যান্টিভাইরাস হালনাগাদ রাখার পাশাপাশি মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (MFA) চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যেকোনো সাইবার হুমকি বা নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বেবিচকের সিএএবি সার্ট (CAAB-CERT) টিম, আইটি বিভাগ এবং জাতীয় সাইবার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমকে জানাতে বলা হয়েছে।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সাইবার হামলার ঝুঁকি ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে জানানো হয়, সম্প্রতি বেবিচকের ওয়েবসাইটেও সাইবার হামলার একটি ঘটনা ঘটেছিল। এ কারণে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা সংস্থাটির ঝুঁকি মূল্যায়নের সুপারিশ করে এবং একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠান নিয়োগের বিষয়টি এখন বিবেচনাধীন রয়েছে।
বেবিচকের এক কর্মকর্তা বলেন, “বিশ্বজুড়ে বিমানবন্দরগুলো এখন সাইবার ও শারীরিক হামলার বড় ঝুঁকিতে। দেশের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতিতে আমরা আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছি, যাতে কোনো ধরনের হামলা বা বিঘ্ন ঘটলেও বিমান পরিবহন কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।”
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধির আশঙ্কার কারণে বিমানবন্দরসহ কৌশলগত স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা সময়োপযোগী উদ্যোগ।
মন্তব্য করুন