নিজস্ব প্রতিবেদক
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলোর ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের চাপ ছিল স্পষ্টতই কম। রোববার সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত এই হরতাল কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর রাস্তাগুলোতে গণপরিবহন ছিল অনেকটাই সীমিত, আর সাধারণ মানুষের চলাচলও ছিল কম।
সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অল্পসংখ্যক বাস, রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় ট্রাফিকের চাপ ছিল অনেকটাই হালকা। দোকানপাটও অনেক এলাকায় খোলা থাকলেও লোকসমাগম ছিল কম।
গোপালগঞ্জের ঘটনার প্রতিক্রিয়া
গত বুধবার গোপালগঞ্জে এনসিপির 'মার্চ টু গোপালগঞ্জ' কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে সেনাবাহিনী ও পুলিশের গুলিতে অন্তত সাতজন নিহত হন। আহত হন শতাধিক। নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন সাধারণ পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দা। এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে।
সরকারি বাহিনীর গুলির কথা স্বীকার করলেও, দায় চাপানো হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর। এ ঘটনায় এখনও গোপালগঞ্জজুড়ে কারফিউ ও ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে।
জনমনে হরতালের প্রতিফলন
যদিও হরতালে সংগঠনের নেতাকর্মীদের বড় ধরনের সড়ক অবরোধ বা সহিংসতার ঘটনা দেখা যায়নি, তবে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছিল মৌনভাবে—সড়কে স্বেচ্ছায় কম বের হওয়া, গণপরিবহন না চালানো ও দোকানপাট আংশিক বন্ধ রাখার মধ্য দিয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাফি আনোয়ার বলেন, এই হরতাল সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের নীরব বার্তা। সক্রিয় অংশগ্রহণ হয়তো হয়নি, কিন্তু সবাই বুঝিয়ে দিয়েছে তারা কাদের পাশে।
গাজীপুরের গৃহিণী আলেয়া খাতুন বলেন, "আমার ছেলেটা বাইরে গেলে এখন মনে হয় গুলি খেয়ে মরবে কি না! হরতাল হোক, অন্তত মানুষ বোঝাক যে তারা ভয় পায় না অন্যায়ের।"
পল্টন এলাকায় কথা হয় পথচারী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই ঘটনার বিচার হওয়া দরকার। যারা নিরপরাধ ছিল, তারা গুলিতে মরল কেন? আজ রাস্তায় না বের হওয়াটা প্রতিবাদের একটা অংশ।
মন্তব্য করুন